ইংরেজবাজারে রাস্তায় বিক্ষোভ চাকরিপ্রার্থীদের। — নিজস্ব চিত্র
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ২০০৯-১০ সালের প্যানেল প্রকাশের দাবিতে চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের ইংরেজবাজারের রথবাড়ি এলাকা। সোমবার দুপুরে শতাধিক চাকরিপ্রার্থী ওই প্যানেল প্রকাশ্যের দাবিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। পুলিশ অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এ দিনের গোলমালের জেরে বেশ কিছু আন্দোলনকারীদের আটকও করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ঢিলেঢালা মনোভাবের জন্য আমাদের নিয়োগ ঝুলে রয়েছে। একাধিকবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে জানিয়েও কাজের কাজ না হওয়ায় এ দিন বাধ্য হয়েই শান্তিপূর্ণ ভাবে রাস্তা অবরোধের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। পুলিশ অযথা লাঠিচার্জ করে আমাদের কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়।’’ ঘটনার প্রতিবাদে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। যদিও লাঠিচার্জের ঘটনা অস্বীকার করেছে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘লাঠি চালানোর ঘটনা ঘটেনি। অবরোধের জেরে যানজটের সৃষ্টি হলে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়।’’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯-১০ সালে মালদহে ১৩৩১টি শূন্যপদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেই সময় প্রায় ১৫ হাজার পরীক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন। পরে ২০১৪ সালের ২ মার্চ পরীক্ষা হয়। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর মৌখিক পরীক্ষা হলেও এখনও প্যানেল প্রকাশিত হয়নি। জানা গিয়েছে, নিয়োগের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে। ২০০৯-১০ সালের পরীক্ষায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের অগ্রাধিকারের দাবিতে এক পরীক্ষার্থী আদালতে মামলা করেন। এখনও আদালতে নিয়োগের বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে। যার ফলে প্রায় পাঁচ হাজার চাকরীর প্রার্থীর নিয়োগ ঝুলে রয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, একাধিকবার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে চাকরীপ্রার্থীরা। তারপরেও কোনও কাজ না হওয়ায় এ দিন ফের আন্দোলন করা হয় বলে দাবি তাঁদের। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জেলা পরিদর্শক গোপাল বিশ্বাসকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি, এসএমএসেরও জবাব দেননি।
জাতীয় সড়কের উপরে ওই অবরোধের জেরে শহর জুড়েও ব্যাপক যানজট হয়। সপ্তাহের প্রথমদিন যানজটের মুখে পড়তে হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন পথচারিরা। পথচারিদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বচসা শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশও। বিক্ষোভকারীদের দাবি, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে ঘটনাস্থলে গিয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সাতজন বিক্ষোভকারীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। তারপরই ছত্রভঙ্গ হয়ে যান বিক্ষোভকারীরা।