আবাস যোজনার তালিকায় নাম না পেয়ে বিক্ষোভ স্থানীয়দের। —নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় নাম না পেয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন গ্রামবাসীরা। সোমবার বিক্ষোভের জেরে প্রায় ২ ঘণ্টা বন্ধ শিলিগুড়ি এবং অসমের যোগাযোগ পথ। শুধু বিক্ষোভ করেই ক্ষান্ত হননি বঞ্চিতরা। থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন। জলপাইগুড়ির সদর ব্লকের পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা।
বিক্ষোভ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার প্রথম তালিকায় নাম থাকা মুন্না আলির মন্তব্য, ‘‘আমার নাম ছিল তালিকায়। পঞ্চায়েত থেকে আমার বাড়িতে এসে সব দেখেও গেল। তার পর আমার নাম কী ভাবে বাদ গেল!’’ শুধু মুন্নাই নন, যোগ্য উপভোক্তা হয়েও ঘর পাননি, এমন অভিযোগ অনেকের। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘যাদের পাকা বাড়ি আছে, সরকারি চাকরি করেন বাড়ির সদস্যরা, তাঁরা কী ভাবে সরকারি প্রকল্পের বাড়ি পাচ্ছেন?’’
স্থানীয় বাসিন্দা পিঙ্কি মাঝি, শিখা দাসদের অভিযোগ, ২০১৮ সালে আবাস যোজনার তালিকায় তাঁদের নাম ছিল। একাধিক বার সমীক্ষা করে গিয়েছেন সরকারি প্রতিনিধিরা। এমনকি, পঞ্চায়েত অফিস থেকে বলাও হয়েছিল যে, তাঁরা ঘর পেয়ে যাবেন। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত আবাস যোজনার তালিকায় দেখা যাচ্ছে তাঁদের নাম নেই! পিঙ্কিরা আরও জানান, তাঁদের বাড়ির দরকার। অথচ, বাড়ি পাচ্ছেন না। অন্য দিকে, যাঁদের পাকা বাড়ি আছে, তাঁদের নাম তালিকায় রয়েছে। তাই তাঁদের অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁদের নাম কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে তালিকা থেকে। তার কারণ তাঁরা জানবেনই।
এই অভিযোগ এবং বিক্ষোভ প্রসঙ্গে পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান বেনুরঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘২০১৮ সালের তালিকা অনুযায়ী, পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েতে মোট ঘর পাওয়ার কথা ৩,৬৮৫ জনের। প্রথম অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে ১,৭২৮ জনকে। এঁদের আশু নতুন বাড়ির প্রয়োজন রয়েছে। এর পর দ্বিতীয় তালিকা বেরোবে। সেখানে থাকবে বাকি ১,৯৫৭ জনের। কিন্তু দ্বিতীয় তালিকার জন্য কেউ ধৈর্য ধরছেন না। তাই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘অনেক অনিয়মের অভিযোগ আসছে। সেগুলোর তদন্ত চলছে।’’
শেষে সোমবার বেলা দেড়টা নাগাদ পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। আশ্বাস পেয়ে রাস্তা থেকে উঠে যান বাসিন্দারা। স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।