গঙ্গার ভাঙনে তলিয়ে যাওয়ার আগে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প। — নিজস্ব চিত্র।
বৈষ্ণবনগর, মানিকচকের পরে এ বার গঙ্গা ভাঙনে জেরবার মালদহের রতুয়া। সোমবার রাত থেকে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের দাবি তুলেছেন গঙ্গা পারের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, ভাঙনে গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে রতুয়ার মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। এমনকি, গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে পুলিশের অস্থায়ী শিবিরও। মঙ্গলবারও দিনভর জেলায় বৃষ্টি হয়েছে। ফলে, ভাঙন নিয়ে আতঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছে নদী পারের বাসিন্দাদের। ভাঙন নিয়ে জেলায় রাজনৈতিক চাপান-উতোরও শুরু হয়েছে। প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, ভাঙন পরিস্থিতি এখনও জেলায় উদ্বেগজনক হয়নি। তবে সেচ দফতরের কর্তারা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন।
মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “ভাঙন নিয়ে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।”
মালদহে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০১.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর এবং গাজলে ১৫০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আগামী দু’দিন জেলায় বৃষ্টি চলবে বলে জানিয়েছেন কৃষি দফতরের আবহাওয়া বিভাগের কর্তারা। চাষে স্বস্তি দিলেও বৃষ্টির মধ্যে জেলায় উদ্বেগ বাড়িয়েছে নদী ভাঙন। এক সপ্তাহ আগে, বৈষ্ণবনগরের খাসপাড়া এবং মানিকচকের গোপালপুরের ভাঙনে বিঘার পরে বিঘা চাষের জমি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। এ বার ভাঙন শুরু হয়েছে রতুয়ার মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীকান্তটোলা গ্রামে। স্থানীয়দের দাবি, ২৪ ঘণ্টায় বাবলাবোনা থেকে নয়াবিলাইমারি পর্যন্ত প্রায় ৫০ বিঘা চাষের জমি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া, স্থানীয় একটি পাকাবাড়িতে পুলিশের অস্থায়ী শিবির চলত। এ দিনের ভাঙনে সে শিবিরও নদীতে তলিয়ে যায়। যদিও ভাঙনের আশঙ্কায় সাত দিন আগেই শিবির থেকে পুলিশকর্মীরা সরে যান। ভাঙন চলতে থাকলে নদী পারের শ্রীকান্তটোলা, জিতুটোলা, পটলডাঙা কান্তুটোলা, বোধারামটোলা তলিয়ে যাবে, দাবি স্থানীয়দের। ভাঙন নিয়ে কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে রতুয়ার তৃণমূলের বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রের সরকার ভাঙন রোধে কোনও কাজই করছে না। রাজ্য সরকার ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে।” পক্ষান্তরে, কেন্দ্রের সরকারের কাছে ভাঙন রোধে কোনও প্রস্তাবই রাজ্য দিচ্ছে না বলে পাল্টা দাবি করেন উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি বলেন, “রাজ্য প্রস্তাব পাঠালে, ভাঙন রোধের টাকা দিল্লি থেকে আমি নিয়ে আসব।” তবে রাজনীতি নয়, ভাঙন রোধের কাজের দাবিতে সরব হয়েছেন গ্রামবাসীরা।