protest march

ফেসবুকে ডাক, তাঁরা প্রতিবাদে

ফেসবুকে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা এদিন কর্মসূচি ঠিক করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:৪৫
Share:

প্রতিবাদ: হাসমিচকে জমায়েত। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

মিছিল যে হবে, তা ঠিক হয়েছিল ফেসবুকেই। সেখানই ডাক দেওয়া হয়। শুরু হয় যোগাযোগ। বিকেল পাঁচটায় হাসমিচকে এসে হাজির হন একে একে বেশ কিছু মানুষ। শিলিগুড়ির বিশিষ্টমুখ হিসেবে তাঁদের অনেকেই পরিচিত। সেখানে জড়ো হয়ে তাঁরা শহরের হয়ে প্রথম মুখ খোলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের কন্যাটির জন্য, যাঁকে সম্প্রতি গণধর্ষণের পরে খুন করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন, এমন কয়েক জন পরে বলেন, ‘‘উন্নাও বা তেলঙ্গানায় যখন এই ধরনের ঘটনা ঘটে, আমরা শিউরে উঠি। এখন নিজের ঘরের মধ্যে চলে এসেছে দুষ্কৃতীরা। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে যদি পথে না নামি, তা হলে নিজের কাছে দোষী হয়ে থাকব। বাড়ির বাচ্চাটার কাছেই বা মুখ দেখাব কী করে!’’

দু’দিন আগেই দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডে চার জনের ‘ডেথ ওয়ারেন্ট’ জারি করেছে দিল্লির দায়রা আদালত। হায়দরাবাদে এক পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ করে খুনের ঘটনাতেও দেশ জুড়ে হইচই হয়েছে। কিন্তু উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত এলাকা কুমারগঞ্জের ওই ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় সে ভাবে এখনও ওঠেনি। মালদহের আমবাগানে সম্প্রতি যে তরুণীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে, সে ভাবে প্রতিবাদ হয়নি সেই মৃত্যু নিয়েও। প্রত্যন্ত এলাকার ওই মানুষদের জন্য ন্যায় বিচারের দাবিতে এ দিন সরব হলেন শিলিগুড়ির বিভিন্ন পেশার কিছু বাসিন্দা।

Advertisement

ফেসবুকে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা এদিন কর্মসূচি ঠিক করেন। কয়েক জন একই শহরের বাসিন্দা হিসেবে চেনা-পরিচিত ছিলেন। তাঁরাই প্রথমে জড়ো হন হাসমিচকে। হাতে প্ল্যাকার্ডে কোনওটায় লেখা ‘ফাঁসি চাই’, কোনটায় ‘আর কত ফুল পুড়ে মরবে’, কোনটায় লেখা ‘ন্যায় চাই’, ‘রাজ্যবাসীর লজ্জা’। কেউ শিক্ষক, কেউ লেখক, কেউ বিএসএনএলের কর্মী বা অন্য কোনও পেশার মানুষ।

আন্দোলনকারীদের তরফে বীরু বর্মণ বলেন, ‘‘হায়দরাবাদের ঘটনায় দেশ জুড়ে আন্দোলন হয়েছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গের ঘটনায় আমরা জেগে উঠি না। হায়দরাবাদের ঘটনার পরেই মালদহে একই রকম ঘটনা ঘটেছিল। আমাদের তেমন নাড়া দেয়নি। আমরা সে ভাবে পথে নামিনি।’’ আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মোটরবাইকে করে তুলে নিয়ে গিয়ে কুমারগঞ্জের তরুণীকে গণধর্ষণ করে খুন করে তিন জন। তার পরে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়। কিন্তু এত নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে কেউ পথে নামেননি, এ দিনের আন্দোলনকারীদের বক্তব্য। ‘‘তাই আমরাই আওয়াজ তুলতে এগিয়ে এলাম,’’ বলেন প্রবীর বর্মণ, মানসি কবিরাজ, শেষাদ্রী বসুর মতো অনেকে।

ফেসবুকে এই পোস্ট দেখে হাসমিচকে চলে আসেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ফেসবুকে পোস্ট দেখেই আমি এখানে এসেছি পরিচিত কিছু মানুষের সঙ্গে প্রতিবাদ জানাতে। অনেকটা বিবেকের তাগিদেই এখানে এসেছি। যে কোনও মেয়ের সঙ্গেই এমন ঘটতে পারে। এর একটা প্রতিবাদ দরকার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement