—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পানীয় জলের জন্য শিলিগুড়িবাসীর দুর্ভোগ চলছেই। পুরসভার পাঠানো জলের ট্যাঙ্কের জন্য কোথাও হাপিত্যেশ করে বসে থাকতে হয়েছে বাসিন্দাদের, কোথাও দোকানে জল কিনতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয়েছে। জলের কালোবাজারি রুখতে কোনও নজরদারি নেই বলেই বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। শুক্রবারেও ৩০ টাকার জলের জার ৫০, ৬০ টাকা দিয়ে অনেকে কিনেছেন। সামর্থ্য না থাকায় এবং পুরসভার তরফে পানীয় জলের ট্যাঙ্কও না পৌঁছনোয়, অনেকে পুরসভার সরবরাহ করা মহানন্দার দূষিত জলই ফুটিয়ে বাড়িতে খাচ্ছেন।
৫ নম্বর ওয়ার্ডে রামঘাট এলাকার বাসিন্দা সুশীল রায়, অঞ্জলি রায়দের কথাই ধরা যাক। তাঁরা জানালেন, পুরসভার পাঠানো দূষিত জলই খাচ্ছেন। অঞ্জলি রায়ের দাবি, ‘‘টাইম কলের জল কয়েক দিন ধরে খেতে পারছি না। এখানে জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হচ্ছে না। জল কিনে খেতে হচ্ছে। রান্না-খাওয়া সবের জন্য জল কিনে খাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।’’ সুশীল রায় বলেন, ‘‘দিনমজুরি করি। কতই বা রোজগার! পুরসভার কলের জল ফুটিয়েই খাচ্ছি।’’ এ দিন ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুভাষ দে বলেন, ‘‘জলের জার
কিনেই খেতে হচ্ছে।’’
পুরসভার দাবি, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৬টি জলের ট্যাঙ্ক ছিল। শুক্রবার থেকে তা বাড়ানো হয়েছে। এ দিন দুপুরের মধ্যে ৪৪টি ট্যাঙ্কে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়। বিকেলের মধ্যে সব মিলিয়ে ৭৫টি ট্যাঙ্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৪৭টি ওয়ার্ডে জল সরবরাহের জন্য। তার মধ্যে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ২,০০০ লিটারের ৩০টি ট্যাঙ্ক, মিরিক পুরসভা একটি, জলপাইগুড়ি পুরসভা তিনটি, ইসলামপুর পুরসভা পাঁচটি জলের ট্যাঙ্ক দিয়েছে।
মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘বাড়তি জলের ট্যাঙ্ক দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁর নির্দেশে অন্যান্য দফতর সহযোগিতা করছে।’’ সেই সঙ্গে মোবাইল ট্রিটমেন্ট ইউনিট রাজ্য থেকে তিনটি পাঠানোয় এখন প্রতিদিন তিন লক্ষ পাউচ বিলির লক্ষ নেওয়া হয়েছে।
মেয়র জানান, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সচিবের সঙ্গে একাধিক বার কথা বলেছেন। বিকল্প ‘ইনটেক ওয়েল’-এর কাজ ২১ জুনের মধ্যে শেষ করতে অনুরোধ করেছেন। সেচ দফতরের সচিবের সঙ্গে কথা বলেছেন, যাতে আজ, ১ জুনের মধ্যে তিস্তার বাঁধের কাজ শেষ করে রাতে বা ২ জুন ভোর থেকে তাঁরা তিস্তার জল পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
তবে জলের ট্যাঙ্ক ওয়ার্ডের কোথায় পাঠানো হচ্ছে বা জলের পাউচ ওয়ার্ডে কোথায় বিলি হচ্ছে, তা এলাকার বাসিন্দারা অনেকেই বুঝতে পারছেন না। পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির অমিত জৈন বলেন, ‘‘পুরসভা কী করছে, বুঝতে পারছি না। ঠিক মতো জল পাচ্ছেন না মানুষ। অনেকেই বিপাকে পড়েছেন।’’
(তথ্য সূত্র: পুরসভা)