এই সেই নির্দেশিকা। নিজস্ব চিত্র
গত বছরের জুলাইতে প্রতিটি ব্যাঙ্কের শাখায় কয়েন জমা নেওয়া বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তার পরেও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েন জমা না নেওয়ার ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা পড়ছিল দেশের সর্বোচ্চ ব্যাঙ্কে। উত্তরবঙ্গ থেকেও অভিযোগ পৌঁছায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কে। শেষ পর্যন্ত গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কয়েন নিয়ে কড়া নির্দেশিকা জারি করা হল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে। অভিযোগ উঠলে প্রয়োজনে কড়া শাস্তির কথাও জানানো হয়েছে নতুন নির্দেশিকায়। পাশাপাশি, এলাকা ভিত্তিক রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নোডাল অফিসারদের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের শাখায় আচমকা পরিদর্শনের নির্দেশ রয়েছে।
নতুন নির্দেশিকা দু’দিন আগে উত্তরবঙ্গে এসে পৌঁছেছে। বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের আশা, এই কড়া পদক্ষেপের জেরে কয়েনের সমস্যা অনেকটা মিটবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর উমা শঙ্করের জারি করা নির্দেশিকা প্রতিটি ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর বা মুখ্য কার্য নির্বাহী অফিসারদের পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিটি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তা শাখা স্তরে পাঠানো শুরু করেছেন। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর হাতেও চিঠির প্রতিলিপি পৌঁছেছে।
উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফোসিনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘কয়েন ব্যাঙ্কে জমা করা বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশিরভাগ শাখায় তা নিতে চায় না। যার ফলে ব্যবসায়ীরাও গ্রাহকদের কাছ থেকে কয়েন নিয়ে অনীহা দেখাচ্ছিলেন।’’
১৯০৬ সালে বৃটিশ আমলে দেশের কয়েন ব্যবস্থা নিয়ে ‘কয়েনেজ অ্যাক্ট’ চালু হয়েছিল। গত বছর পর্যন্ত সেই আইন সংশোধন হয়েছে। আইন অনুসারে ১ থেকে ১০ টাকার কয়েন মিলিয়ে এক হাজার টাকা যে কোনও সময় ব্যাঙ্কে জমা করা যাবে। কিন্তু গত এক বছর ধরে কয়েন সমস্যা বেড়েছে। ব্যাঙ্কে ঠিকঠাক জমা করতে না পারায় বিভিন্ন বাজারে বহু দোকানে খুচরো নিতে এখনও অস্বীকার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে এক টাকা এবং দুই টাকা মিলিয়ে ৫ হাজার টাকার কয়েন নিয়ে গিয়ে বিপাকে পড়েন এক কাপড় ব্যবসায়ী। এত কয়েন নেওয়া যাবে না, গোনার লোক নেই, এসব শুনে বিরক্ত ব্যবসায়ী বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ করে বসেন। তিনি বলেন, ‘‘এর পরে আমিও গ্রাহকদের থেকে কয়েক নেব না।’’ একই অভিজ্ঞতা রয়েছে কোচবিহারের আরেক জুতো ব্যবসায়ীরও।
নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রতিটি ক্যাশ কাউন্টারে পলিথিন ব্যাগ রাখতে হবে। তাতে ১০০টি করে ১টাকা বা ২ টাকার ভরে জমা নিতে হবে। আবার ব্যাঙ্কের শাখায় কয়েনের সংখ্যা বেড়ে গেলে, রাখার জায়গার সমস্যা হলে তা স্থানীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কারেন্সি চেস্টে পাঠিয়ে দিতে হবে। এর পরেও নির্দেশ অমান্য করলে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর।