রিমঝিম, মিনি জ়ু কর্তৃপক্ষের নোটিস (মাঝে), গরিমা (ডান দিকে)। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
রিমঝিম, গরিমাদের আর রোজ দেখার সুযোগ মিলবে না। কোচবিহারের রসিকবিল মিনি জ়ু’র চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রে ওই দুটি মাদি চিতাবাঘ রয়েছে। চলতি ফেব্রুয়ারি থেকে সপ্তাহে এক দিন সেখানে পর্যটক প্রবেশ নিষিদ্ধ করছে বন দফতর। কাল, বৃহস্পতিবার থেকেই পুরোপুরি ভাবে ওই নিয়ন্ত্রণ চালু হচ্ছে। এ বার থেকে প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার সেখানকার দরজা পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকবে। মঙ্গলবার কোচবিহার থেকে এক বনকর্তা ওই ব্যাপারে প্রস্তুতির তদারকি করতে রসিকবিলে যান। গত সপ্তাহেই প্রথম বৃহস্পতিবার সেখানে পর্যটক প্রবেশ বন্ধের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু পর্যটকদের ভিড় থাকায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। এ বার তাই আগেভাগেই তৎপরতা বাড়ে কোচবিহারের ডিএফও-র দফতরে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় দশক আগে রসিকবিল মিনি জ়ু’তে ওই চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রটি চালু হয়। পরে সেখানকার আবাসিক চিতাবাঘদের অবশ্য অন্যত্র পাঠানো হয়েছে। গত বছর দক্ষিণ খয়েরবাড়ি থেকে রিমঝিম, গরিমা নামের ওই চিতাবাঘ দু’টিকে রসিকবিলে আনা হয়। এ ছাড়াও সেখানে রয়েছে হরিণ উদ্যান, ঘড়িয়াল পার্ক, ময়ূর, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, কাছিমও। শীতের মরসুমে ভিড় করে পরিযায়ীরাও। সব মিলিয়ে পর্যটক টানে রসিকবিল। কোচবিহারের ডিএফও বিমান বিশ্বাস বলেন, “ চিতাবাঘ সহ নানা বন্যপ্রাণীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, এলাকার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য সপ্তাহে এক দিন করে ওই মিনি জ়ু’তে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে তা পুরোপুরি কার্যকর করার জন্য তোড়জোড় চলছে।”
বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, বেশিরভাগ চিড়িয়াখানাতেই সপ্তাহে একদিন পর্যটক প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়। রসিকবিল মিনি জ়ু’তে নানা কারণে তা চালু হয়নি। সেন্ট্রাল জ়ু অথরিটি’র ‘গাইড লাইন’ মানতে এ বার জোর দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার ১ রেঞ্জের আধিকারিক সুরঞ্জন সরকার বলেন, “রসিকবিলে রিমঝিম, গরিমা নামের চিতাবাঘ-সহ অন্য প্রাণীদের পরিচর্চার কাজে সুবিধা হবে। পশু-পাখিরাও একদিন মানুষের ভিড় থেকে রেহাই পাবে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা দরকার।”
বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারের ওই মিনি জ়ু’তে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে। গত জানুয়ারিতে ৩০ হাজারের বেশি পর্যটক রসিকবিলে এসেছেন। ডিসেম্বরে ওই সংখ্যা ছিল প্রায় ১৪ হাজার। এ ছাড়া বাকি মাসগুলিতে সাধারণত ৪-৫ হাজার পর্যটকের ভিড় হয়। বন দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, পশু-পাখিদের অসুবিধার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে পিকনিক বন্ধের উদ্যোগও আগেই নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্লাস্টিকমুক্ত রাখতে সেখানে নজরদারি, সচেতনতা দুই-ই বাড়ানো হয়েছে। পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাস গ্রুপের সম্পাদক অরুপ গুহ বলেন, “ দার্জিলিং, আলিপুর চিড়িয়াখানাও সপ্তাহে এক দিন বন্ধ রাখা হয়। তাই রসিকবিল মিনি জ়ু’তে আরও আগেই সাপ্তাহিক পর্যটক বন্ধ চালু দরকার ছিল।”