ফাইল চিত্র।
তরাইয়ের একাধিক চা বাগিচা এলাকায় কালো পতাকা দেখিয়ে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হল বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা ও জন বার্লাকে। শুক্রবারের ঘটনা। দু’টি জায়গায় সাংসদের কনভয় ঘিরে বিক্ষোভও হয়েছে। বিজেপি কর্মীরা এবং বিক্ষোভকারীরার মুখোমুখি চলে আসায় উত্তেজনাও ছড়ায়।
গত বছর পাহাড়েও রাজু বিস্তার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন পাহাড়বাসীর একাংশ। এ দিন আন্দোলনকারীরা কালো পতাকা, প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা না থাকলেও বিজেপির অভিযোগ, সবই তৃণমূল ও পুলিশের মদতেই ঘটানো হয়েছে। তৃণমূলের নামে স্লোগান দেওয়া হয়েছে বলেও বিজেপির দাবি। আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা বলেন, ‘‘সবই দিদির দলের লোক। শ্রমিক স্বার্থে কাজ না করে বাগানের পরিবেশ নষ্ট করতে কাজ করা হচ্ছে। এই সব স্লোগান, পতাকায় আমাদের কিছু যায় আসে না।’’ দিল্লিতে সব জানানো হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
এ দিন বিক্ষোভকারীরা সাংসদদের লক্ষ্য করে একাধিক প্রশ্ন করেন। অসমে বিজেপি সরকার থাকলেও শ্রমিকেরা সেখানে এ রাজ্য থেকে কম মজুরি, চাল কেন পান সেই প্রশ্ন সাংসদের উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে দেওয়া হয়। লোকসভা ভোটের আগে বাগানের কেন্দ্রীয় অধিগ্রহণের কথা বলা হলেও তা প্রধানমন্ত্রী কেন কার্যকর করতে পারেননি তা জানতে চাওয়া হয়। তেমনিই, করোনার সংক্রমণের প্রথমদিকে শ্রমিকদের দুর্দশা দেখতে সাংসদ আসেননি কেন তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ দিন সকালে দুই সাংসদ এমএম তরাই, অর্ড, ত্রিহানা, বেলগাছি, মারাপুর, জাবরা, হাতিঘিষা বাগানে যান। তাঁরা শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় শ্রম আইনে ন্যূনতম মজুরি-সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা বলেন। এলাকার রাস্তা, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তারমধ্যেই তৃণমূলের ঘাঁটি ত্রিহানা, অর্ড, বেলগাছিতে বেশি স্লোগান, বিক্ষোভ হয়েছে। তবে কোথাও আন্দোলনকারীরা সাংসদদের গাড়ি আটকানো, কর্মসূচিতে বাধা দেননি।
রাজু বিস্তা বলেছেন, ‘‘নতুন শ্রম আইন সম্পর্কে আমরা শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকে বিষয়টি শুনেছেন, বুঝতে পারছেন। বাকি বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’ দলীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি তরাই জুড়ে সঙ্ঘের শ্রমিক সংগঠনে বড়সড় ভাঙন হয়েছে। যারা গিয়েছেন তাঁদের মধ্যে অনেকে আগে তৃণমূলেই ছিলেন। বিধানসভা ভোটের আগে তা নিয়ে বিজেপি শিবিরে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। আদিবাসী নেতা জল বার্লাকেও তরাইয়ের বাগানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
চা বাগান তৃণমূল মজদুর ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক নির্জ্জল দে বলেন, ‘‘গোটা কনভয়ে বাগানের লোকের বদলে বাইরের থেকে লোক গাড়ি, বাইকে আনা হয়েছিল। বিজেপি বছরের পর বছর চা বাগান নিয়ে যে মিথ্যা কথা বলে চলছে শ্রমিকেরা এ দিন তার প্রতিবাদ করেছেন।’’