রাজু বিস্তা। — ফাইল চিত্র।
পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সের শ্রমিকদের প্রজাপাট্টা সুনিশ্চিত করার দাবিতে কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়েছেন সাংসদ রাজু বিস্তা৷ সাংসদের অভিযোগ, নিজস্ব জমিতে চা ও সিঙ্কোনা শ্রমিকেরা বংশপরম্পরায় বসাবাস করছেন। সেখানকার জমিতেই তাঁদের সাধারণ পাট্টা দিতে হবে। রাজ্য সরকার তার বদলে শরণার্থী পাট্টা দেওয়া নিয়ে কাজ করছে বলে খবর। সম্প্রতি সাংসদ লোকসভাতেও বিষয়টি তোলেন। কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকেও জানান তিনি। সম্প্রতি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অনুপ্রিয়া পটেল চিঠি দেন সাংসদকে। সেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সাংসদ বলেন, ‘‘চা শ্রমিকদের নানা ভাবে দুর্দশায় থাকতে হচ্ছে। একই অবস্থা সিঙ্কোনা চা বাগানের কর্মীদেরও। এঁরা কেউই ভূমিহীন নন। বংশপরম্পরায় এঁরা বাগানে থাকছেন। তাই এঁদের ভূমিহীন পাট্টা বা শরণার্থী পাট্টা দেওয়ার কথা হচ্ছে বলে শুনেছি। এটা প্রতিবাদ জানিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকে সব জানানো হয়েছে।’’ এ প্রসঙ্গে জিটিএ-র প্রধান সচিব তথা দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, ‘‘পুরোটাই ভূমি দফতরের বিষয়। আর এখন পাট্টা দেওয়া নয়, সমীক্ষা হচ্ছে বলে জানি।’’
সরকারি সূত্রের খবর, কয়েক বছর ধরেই চা বাগানের শ্রমিকদের জমির অধিকার নিয়ে আলোচনা চলছে। শেষ বার মিরিক পুরসভায় জমির পাট্টার আশ্বাস দিয়ে পাহাড়ের কোনও পুরসভায় প্রথ মবার ক্ষমতা এসেছিল তৃণমূল। মিরিকে পাট্টাও অনেক দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে চা বাগানের শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার দাবি উঠতে থাকে। পাহাড়ের পুরসভা এবং জিটিএ ভোটের আগেও, পাহাড়ে দাবি মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়। ফেব্রুয়ারিতে শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে একটি সরকারি সুবিধা প্রদানের সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি পাহাড় থেকে শুরু করে সমতলেও চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা দেওয়ার ঘোষণা করেন। পাহাড়ে কয়েকটি বন্ধ বাগানের হাতে গোনা শ্রমিকদের পাট্টা পরীক্ষামূলক ভাবে দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সমীক্ষা করে পাট্টা দিতে ছয়-আট মাস লাগবে। আপাতত সরকারি স্তরে সে কাজ চলছে। গত ১৪ মার্চ সংসদে ফের সরব হন বিস্তা। তিনি জানান, সংসদ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি কিছু দিন আগে, পাহাড়, তরাই, ডুয়ার্সের চা এবং সিঙ্কোনা, বাগানের শ্রমিকদের প্রজাপাট্টার দেওয়ার পরামর্শ দেয়। সেখানে রাজ্য ভূমিহীন পাট্টার প্রস্তুতি কী করে নেয়, তা নিয়ে সাংসদ প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও জিটিএ প্রধান অনীত থাপা জানান, সঠিক আইনেই শ্রমিকেরা জমির অধিকার পাবেন। ভুমিহীন বলার বিষয় নেই।