প্রতীকী ছবি।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে বধূকে গলা কেটে খুনের ঘটনায় ‘নীরব’ অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে কার্যত ‘বিপাকে’ পড়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকালে অভিযুক্ত প্রবাল সরকারকে রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালত দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দিন বিকাল থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত বেশিরভাগ সময় প্রবাল রায়গঞ্জ থানার লক আপে মাথা নিচু করে বসেছিল। এই সময়ে একাধিক বার তদন্তকারী পুলিশ-কর্তারা প্রবালকে লক-আপ থেকে বার করে একটি ঘরে নিয়ে যান। সেখানে তদন্তকারীরা প্রবালের কাছে বধূ খুনের বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব চান। তদন্তকারী এক পুলিশ-কর্তার দাবি, “প্রবাল পুলিশকে কোনও প্রশ্নেরই জবাব দিচ্ছে না। মাথা নিচু করে নীরব হয়ে থাকছে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে প্রবালকে নিয়ে ওই বধূর বাড়িতে গিয়ে খুনের ঘটনার পুননির্মাণ প্রক্রিয়া এক রকম আটকে গিয়েছে। পাশাপাশি, খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি। ঠিক কী কারণে ওই বধূকে খুন করা হয়েছিল, সে বিষয়েও তথ্য পেতে পুলিশের ‘কালঘাম’ ছুটেছে। রায়গঞ্জ পুলিশ-জেলার এক কর্তা বলেন, “আদালতের নির্দেশে পুলিশ লক-আপে কোনও বিচারাধীন বন্দিকে মারধর কিংবা তার উপরে চাপসৃষ্টি করা বেআইনি। তা ছাড়া, কোনও ভাবে পুলিশ লক-আপে প্রবাল অসুস্থ হয়ে পড়লে, তদন্ত ব্যাহত হতে পারে। তাই পুলিশ-কর্তারা নীরব প্রবালকে নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন।’’
গত ১১ নভেম্বর বিকালে রায়গঞ্জ শহরের রবীন্দ্র পল্লিতে শোওয়ার ঘরের বিছানা থেকে সুপ্রিয়া দত্ত(৪১) নামে এক বধূর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় গত বুধবার দুপুরে আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার বাবুপাড়ার একটি হোটেল থেকে প্রবালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, কাজের সূত্রে দীর্ঘ সময় প্রবাল থাকতেন জলপাইগুড়িতে। সুপ্রিয়ার বাপের বাড়িও জলপাইগুড়িতে। সে সূত্রে তাঁদের মধ্যে প্রথমে ঘনিষ্ঠতা ও পরে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ডিএসপি (রায়গঞ্জ) রিপন বল বলেন, ‘‘সম্পর্কের অবনতির জেরে প্রবাল সুপ্রিয়াকে খুন করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। প্রবালকে তদন্তে সহযোগিতা করার অনুরোধ করা হয়েছে।’’