কন্যাশ্রী: রুস্মিতা ওঁরাও।
বাবা কালু ওঁরাও চা শ্রমিক মা রুপনি ওঁরাও-ও অস্থায়ী ভিত্তিতে বাগানের কাজ করেন। কোনক্রমে সংসার চালিয়ে মেয়েকে পড়াশুনো জারি রেখে দিয়েছিলেন ওরা। পড়তে পড়তেই ডিম্বাকৃতি রাগবি বলটার সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হয়ে যায়। বাবা মা-ও মেয়ের এই অদ্ভুত খেলায় অবাক হলেও না করেননি। আজ সেই খেলার জন্যই জেলার মুখ হয়ে কন্যাশ্রী দিবসে কলকাতায় যাচ্ছে রুস্মিতা। মালবাজার ব্লকের ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের গজলডোবা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী রুস্মিতা ওঁরাও এ বার কন্যাশ্রী দিবসে কলকাতার রাজ্য স্তরের মূল অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে থাকার সুযোগ পেয়েছে।
রুস্মিতার বাড়ি সরস্বতীপুর চা বাগানে। গজলডোবা উচ্চ বিদ্যালয়কে ব্লক প্রশাসন থেকে রুস্মিতার এই চূড়ান্ত অনুমোদনের বিষয়টি জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। গত একবছর ধরে রুস্মিতা জাতীয় মহিলা রাগবি দলের নিয়মিত সদস্য। আন্তর্জাতিক মঞ্চে দুবাইতে গিয়েও সাফল্য রয়েছে রুশ্মিতার ঝুলিতে। জুন মাসে চণ্ডীগড়ে জাতীয় স্তরের রাগবি প্রতিযোগিতাতেও বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছে রুস্মিতা। বছর ১৬-র রুস্মিতাকে স্কুলের পক্ষ থেকে এই খবর বৃহস্পতিবার জানানো হয়। রুস্মিতা বলে, “স্যার ম্যাডামরা সব সময়ই পাশে থেকেছেন।” খুশি রুশ্মিতার বাবা কালু ওঁরাও। রুস্মিতার এই কৃতিত্বে খুশিতে ভাসছে গজলডোবা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রবীর সাহা এবং কন্যাশ্রী দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, “আমরা রুস্মিতার নাম ব্লক প্রশাসনকে জানিয়ে রেখেছিলাম। ও যে রাজ্য পর্যায়ে নজর কেড়ে নেবে সে বিষয়েও আমাদের যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস ছিল।” মালবাজারের মহকুমাশাসক সিয়াদ এন বলেন, “মালবাজার মহকুমা থেকে জেলার চা বলয়ের প্রতিনিধিত্ব করবে রুস্মিতা এটাই বিরাট ব্যাপার, রুস্মিতা চূড়ান্ত বাছাইতে সফল হওয়ায় তাই আমরাও গর্বিত।”