আসরে: কীর্তনের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী। বুধবার রাতে। নিজস্ব চিত্র
জনসংযোগে এতদিন কীর্তনের আসরে গিয়ে বসেছেন। এবার উদ্যোক্তাদের হেঁশেলেও ঢুকে পড়লেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
বুধবার রাতে কোচবিহারের ডাউয়াগুড়ি এলাকায় একটি কীর্তনের অনুষ্ঠানে যান তিনি। সেখানে ভক্তদের ভিড়ে মিশে বাতাসাও ছড়িয়ে দেন। পরে কীর্তনের উদোক্তাদের হেঁশেলে ঢুকে পড়েন। ভক্ত ও আগ্রহী দর্শনার্থীদের জন্য খাবারের কী আয়োজন হয়েছে সে-সবের খোঁজ নেন। হেঁশেলে রান্নার কাজে ব্যস্ত লোকজনের সঙ্গে সৌজন্যও বিনিময় করেন। এরপর প্রসাদ খান। এমনকি, কীর্তনের অনুষ্ঠানে একদিন ভক্তদের প্রসাদ খাওয়াবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। বিরোধীদের অবশ্য কটাক্ষ, এসব লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের জের। নজর কেড়ে নিজের গড় রক্ষা করার চেষ্টা।
মন্ত্রী অবশ্য তাতে বিশেষ আমল দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “ছোটবেলা থেকেই কীর্তনের আসরে যাওয়ার অভ্যেস আছে আমার। ডাউয়াগুড়ি গ্রামে আমার পৈতৃক বাড়ি। ওই কীর্তনের অনুষ্ঠানের সঙ্গে ছোটবেলা থেকে আমি যুক্ত। অনেক স্মৃতি জড়িয়ে। তাই সেখানে গিয়েছি। উদ্যোক্তাদের পাশে থাকতে চাইছি।”
ডাউয়াগুড়ি এলাকা কোচবিহারের নাটাবাড়ি বিধানসভার অধীন। মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা। গত লোকসভা নির্বাচনে নিজের খাসতালুক নাটাবাড়িতেও ‘লিড’ নেয় বিজেপি। ভোটের ফল প্রকাশের পর জেলা জুড়েই ভোটারদের সমর্থন ফেরাতে কোমর বেঁধে নামেন তৃণমূল নেতারা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তাঁর গড় বলে পরিচিত নাটাবাড়ি এলাকায় ধারাবাহিক কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন। দেওয়ানহাট, পানিশালা, চিলাখানার মতো একাধিক এলাকায় গত কয়েকদিনে নানা কীর্তনের আসরে গিয়েও বসেন। ডাউয়াগুড়িতে কীর্তনের আসরে হেঁশেলে ঢুকে জনসংযোগ তাতে নতুন সংযোজন।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, ভোট-বাজারে বিজেপির পালের হাওয়া কাড়তেই এমন উদ্যোগ নিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। বিজেপির কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “লোকসভা ভোটের ধাক্কায় তৃণমূল নেতারা অনেক জায়গাতেই যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এখন সেটা হেঁশেল অবধি পৌঁছেছে। সবটাই বিজেপি জুজুর জের। সাধারণ মানুষ সবই বুঝতে পারছেন। এসব করে আখেরে কোনও লাভ হবে না।” রবীন্দ্রনাথ অবশ্য বলছেন, “সম্প্রদায় নিয়ে রাজনীতি আমরা করি না। সবার সব অনুষ্ঠানে বরাবর যাই।”