পাশাপাশি: উৎসবের মঞ্চে রবীন্দ্রনাথ ও উদয়ন। নিজস্ব চিত্র
রবীন্দ্রনাথ-উদয়নের বিরোধ গত কয়েক মাসে একাধিকবার সামনে এসেছে। এমনকি ১৯ জানুয়ারির ব্রিগেড সমাবেশ থেকে দিনহাটার স্বাস্থ্যমেলাতেও এক সঙ্গে দেখা যায়নি দুই নেতাকে।
রবিবার কোচবিহারে উত্তরবঙ্গ উৎসবের সূচনায় তাঁরা যে ঐক্যবদ্ধ তা বোঝাতে সাংবাদিকদের সামনে হাতে হাত চেপে ধরলেন দুই নেতা। হাসি হাসি মুখে দু’জন থাকলেনও বেশকিছু সময়। আপনারা কি ঐক্যবদ্ধ—প্রশ্ন ছুড়তেই দু’জন এক সঙ্গে বলে উঠলেন, “আমরা তো কখনও আলাদা ছিলাম না।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “দল জেলায় বরাবর ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। কোথাও কোনও বিরোধ নেই। সব বিরোধীদের অপপ্রচার।” দিনহাটার বিধায়ক তথা বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ, “দল বড় হলে কোথাও কোথাও ছোটখাটো ঘটনা হয়। সেটা কোনও বিরোধ নয়।”
দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের মধ্যে কোচবিহারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে দীর্ঘসময় ধরেই। গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে বড় আকার ধারণ করে। মূল ও যুব তৃণমূলের মধ্যে মূলত লড়াই শুরু হয়। যুব তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গেই সখ্য গড়ে ওঠে উদয়নবাবুর। বাম ছেড়ে তৃণমূলে যোগের সময় উদয়নবাবুর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরোধ থাকলেও পরে দু’জনের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। এমনকি একসময় রবীন্দ্রনাথ-উদয়নের জুটি জেলায় দল পরিচালনা করছে বলেও দলীয় স্তরে আলোচনা শুরু হয়। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই অবশ্য পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন সহ নানা ইস্যুতে দু’জনের বিরোধ সামনে চলে আসে। উদয়নবাবুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের। পার্থবাবু বর্তমানে জেলায় রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরোধী বলেই পরিচিত।
এই পরিস্থিতিতে গত ৮ জানুয়ারি কোচবিহারে রাসমেলার মাঠে সভা করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কড়া বার্তা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও অবশ্য ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশে আলাদা আলাদা ভাবে দলীয় কর্মীদে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে দু’জনকে।
উদয়নবাবুর সঙ্গে পার্থবাবুকেও দেখা গিয়েছে।