—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে মহিলাদের ভোটের বড় অংশ লোকসভা ভোটে তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে, এমন দাবি বহু ভোট বিশেষজ্ঞের। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও মহিলা ভোটকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। আর জি কর-কাণ্ডের পরে রাজ্যের সাধারণ মহিলারা প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। মহিলাদের ‘রাত দখল’ কর্মসূচি দেশ-রাজ্য ছাড়িয়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে সফল হয়েছে। মহিলাদের ‘ক্ষোভ’ যে প্রশমিত হয়েছে, তা নয়। প্রতিদিনই রাজ্যের নানা প্রান্তে মিছিল হচ্ছে, যার নেতৃত্বে থাকছেন মহিলারা। এই অবস্থায় সাধারণ মহিলাদের ‘ক্ষোভ’ প্রশমিত করতে ময়দানে নামল শাসক দলের মহিলা সংগঠন। গৌড়বঙ্গের তিন জেলাতেই রাজ্যের নেতৃত্বের নির্দেশে শুরু হয়েছে দলের মহিলা পদাধিকারী এবং নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের আর জি কর নিয়ে 'ক্লাস'। দলের উঁচুতলার নেত্রীরা তাঁদের আঞ্চলিক নেত্রী ও সদস্যাদের নিজেদের এলাকায় গিয়ে প্রচারে জোর বাড়াতে বলেছেন।
তৃণমূল সূত্রের দাবি, গৌড়বঙ্গের তিন জেলাতেই সাধারণ মহিলারাদের সঙ্গে দলের নিচু তলার সমর্থকেরাও আর জি কর-কাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে মিছিলে যাচ্ছেন। তেমনই অনেকে ঘটনার প্রতিবাদে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের উপভোক্তা থাকার সুযোগ ছেড়ে দেবেন কি না সে আলোচনাও উঠছে। যদিও এরই মধ্যে দুয়ারে সরকার শিবিরগুলিতে লক্ষ্মীর ভান্ডার অনুদান ছেড়ে দেওয়ার ফর্ম রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। এমন পরিস্থিতিতে মালদহ, বালুরঘাট, রায়গঞ্জে ছোট ছোট বৈঠক করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টায় নেমেছেন তৃণমূল নেত্রীরা। যদিও মালদহে তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী সাগরিকা সরকার বলেন, ‘‘লক্ষীর ভান্ডার প্রতিবাদে ছেড়ে দেওয়ার কথা বিরোধীদের অপপ্রচার। সবাই ঘটনায় দোষীদের শাস্তি চাইছেন। মানুষও শাস্তি চায়।’’
উত্তর দিনাজপুর তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলার প্রতিটি মিছিলের উপরেই খোঁজখবর রাখছেন জেলা মহিলা তৃণমূলের নেত্রীরা। নেত্রীদের দাবি, আর জি কর-কাণ্ডের সঙ্গে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মহিলাদের অর্থনৈতিক ভাবে কিছুটা স্বনির্ভর করতে এই প্রকল্প বলেও মহিলাদের বোঝানো হচ্ছে। দক্ষিণ দিনাজপুর তৃণমূল সূত্রে খবর, কারা মিছিলে যাচ্ছেন, ব্যক্তিগত ভাবে তার খোঁজ রাখার থেকেও এই মুহূর্তে কী ভাবে ক্ষোভ উপশম করা যায়, তার উপরেই জোর দিচ্ছেন নেত্রীরা। তাই জেলায় শুক্রবার থেকে তিনটি বৈঠক হয়েছে। দলের মহিলা নেত্রী, দলীয় জনপ্রতিনিধিদের নিজের এলাকায় প্রচারে নামতে বলা হয়েছে।
আর জি কর নিয়ে শীর্ষ আদালতের তোলা বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়েও সাধারণ মহিলাদের মধ্যে ক্ষোভের জায়গা রয়েছে। যার উত্তর হয়তো দলের মহিলা নেত্রীরা দিতে পারছেন না। তাই আদালতের অন্তর্বর্তী নির্দেশগুলির উপরেও কড়া নজর রেখে চলতে বলা হয়েছে নেত্রীদের।
তথ্য সহায়তা: অভিজিৎ সাহা, গৌর আচার্য