—প্রতীকী চিত্র।
ফের ভিন্ রাজ্যে রেলের কাজে গিয়ে মৃত্যু হল মালদহের এক শ্রমিকের। সোমবার দুর্ঘটনাটি ঘটেছে অসমের জোরহাট জেলার টিটাবরে। মঙ্গলবার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে মৃত আশিক শেখ (২২)-এর বাড়ি মানিকচকের এনায়েতপুর গ্রামে। এ দিন মৃতের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা নেতারা।
রেলের কাজে গিয়ে বার বার জেলার শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি মিজ়োরামে নির্মীয়মাণ রেলসেতু ভেঙে জেলার ২৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সে ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের অসমে রেলের কাজ করতে গিয়ে আসিক শেখের মৃত্যুতে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের মাইগ্র্যান্ট লেবার ওয়েলফেয়ার বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “কোনও রকমের সুরক্ষা ছাড়াই, রেল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। ফলে, দুর্ঘটনা ঘটলে শ্রমিকদের বাঁচানো যাচ্ছে না। পরে, সেই শ্রমিকদের দেহও পর্যাপ্ত সংরক্ষণ ছাড়াই জেলাগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ রেল। উত্তর-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, “সুরক্ষা নিয়েই রেলের কাজ করা হয়। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত হচ্ছে।”
প্রশাসনের দাবি, আশিক দু’মাস আগে, অসমের জোরহাটের টিটাবরে রেলের বৈদ্যুতীকরণের কাজে যান। সোমবার কাজ করার সময় আচমকা তার ছিঁড়ে পড়ে যান। সে সময় উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রেন তাঁকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। আসিকের বাবা সফিকুল শেখ বলেন, “ছেলে রেলের বিদ্যুতের কাজ করত। এখনও তাঁর দেহ বাড়িতে পৌঁছয়নি।” মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “অসমের প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। দেহ জেলায় ফেরানোর ব্যবস্থা চলছে।”
এ দিনই পুখুরিয়ার চৌদুয়ার গ্রামে মিজোরামে মৃত শ্রমিকদের বাড়িতে গিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন বিজেপি-র উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি বলেন, “ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। রাজ্যে কর্মসংস্থান না থাকায়, জেলার শ্রমিকদের ভিন্ রাজ্যে ছুটতে হচ্ছে।” কেন্দ্র ১০০ দিনের প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ায় শ্রমিকদের বাইরে যেতে হচ্ছে বলে পাল্টা দাবি করেন সাংসদ সামিরুল ইসলাম।