West Bengal Panchayat Election 2023

‘অনিয়ম’ সত্ত্বেও জয় কী ভাবে, চর্চা

 

 

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৩ ০৮:৪১
Share:

—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP

আবাস যোজনার ঘর বিলি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে একই দিনে তিন বার জাতীয় সড়ক অবরোধ হয়েছিল জলপাইগুড়ির অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতে। পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘেরাও হয়েছিল অনিয়মের অভিযোগে। করলা ভ্যালি চা বাগানের শ্রমিকেরা মহাসড়ক স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন কয়েক ঘণ্টা। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ ছিল তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের পরে সেই এলাকাগুলিতে সবুজ আবির উড়েছে। প্রতিটিতেই বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল।

Advertisement

রাজগঞ্জ এবং ময়নাগুড়ি ব্লকে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল কেন্দ্রীয় দল। জেলা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় দলের কাছে গ্রামবাসীরা নালিশও জানিয়েছিলেন। ময়নাগুড়ি এবং রাজগঞ্জের সে সব পঞ্চায়েতই ফের তৃণমূলের দখলে গিয়েছে।

‘কাটমানি’র অভিযোগে গত লোকসভা ভোটের পরে, ময়নাগুড়ির এক তৃণমূল নেতার বাড়ির দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন বাসিন্দারা। বিক্ষোভ সামলাতে বিশাল পুলিশবাহিনী পাঠাতে হয়েছিল। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছিল বেরুবাড়িতে। দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই জিতেছে তৃণমূল।

Advertisement

জলপাইগুড়ি জেলার ৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে সাতটি। আরও সাতটি ত্রিশঙ্কু অবস্থায় রয়েছে। বাকি সব গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। বিরোধীদের দখলে বা ত্রিশঙ্কু হওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে গত পাঁচ বছরে সে ভাবে দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি। যে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি অভিযোগের নিরিখে সামনের সারিতে ছিল, তার সব কটিতেই তৃণমূল জয় পেয়েছে।

অনেকে এই ফলে বিস্ময় প্রকাশ করলেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও বিরোধীরা তাকে ভোটবাক্স পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেননি। আবাস যোজনা বা একশো দিনের কাজ নিয়ে যে অভিযোগগুলি উঠেছিল, তা অরাজনৈতিক ভাবে উঠেছিল। নাগরিকেরা প্রতিবাদ করেছিলেন। বিরোধীরা তাতে খুশি হলেও সে অভিযোগ নিয়ে ওই বড় কোনও আন্দোলন হয়নি। বিরোধীরা ভেবেছিলেন, নাগরিকদের ক্ষোভ ভোটে প্রভাব ফেলবে। তা না হওয়ার কারণ হিসেবে পর্যবেক্ষকদের দাবি, সময়ের সঙ্গে ক্ষোভে প্রলেপ যেমন পড়েছে, তেমনই তৃণমূলের প্রার্থীদের বেশির ভাগই এ বার নতুন ছিলেন। এ ছাড়া, অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা প্রার্থীদের দল টিকিট দেয়নি। তার ফলে তৃণমূল বার্তা দিতে পেরেছে যে, ব্যক্তি দুর্নীতি করলেও দলের সমর্থন নেই।

জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপের দাবি, ‘‘দুর্নীতি তৃণমূল বরদাস্ত করে না। তা এ বার প্রার্থী ঠিক করার মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই মানুষ ভুল করেননি। তৃণমূলকেই ভোট দিয়েছেন।’’ জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘ভোট হয়নি। ছাপ্পা হয়েছে, ব্যালট বদলানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আবাসের অনিয়ম দেখতে আবার কেন্দ্রীয় দল জেলায় যাচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement