Politics

উন্নয়নের নামে রাজনীতি কে বন্ধ করে?

পাহাড়ের ভোট নিয়ে এখানে একটা সহজ কথা মনে হয়। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, পাহাড়ের ভোট বছরের পর বছর ধরে উন্নয়ন-রহিত বা আরও ভাল করে বললে, সাধারণ মানুষের স্বার্থ-রহিত হয়ে পড়ছে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৪ ০৯:১৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার বঙ্গের বিজেপি সাংসদদের এ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিতে বলেছেন। দেড় বছর পরে নির্ধারিত সময়ে বি‌ধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তাই প্রধানমন্ত্রী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরুর কথা বুঝিয়েছেন বঙ্গ সাংসদের, সাদা চোখে এটা ধরে নেওয়াই যায়। ভোট এগিয়ে আসবে কি না, তা ভবিষ্যৎ বলবে। সে সম্ভাবনা আপাতত নেই বললেই চলে। কারণ, ২০২১ সালের নিরিখে এ বছর বিজেপির বাংলা ‘প্যারফরম্যান্স’ ভাল নয়। কেন্দ্রীয় বিজেপি হয়তো চাইছে, বিধানসভার প্রস্তুতি শুরু হোক এখন থেকেই।

Advertisement

পাহাড়ের ভোট নিয়ে এখানে একটা সহজ কথা মনে হয়। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, পাহাড়ের ভোট বছরের পর বছর ধরে উন্নয়ন-রহিত বা আরও ভাল করে বললে, সাধারণ মানুষের স্বার্থ-রহিত হয়ে পড়ছে। শুধু যেন-তেন-প্রকারেণ পাহাড়ে বা আশপাশে নিজেদের জনপ্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করাই একমাত্র লক্ষ্য সব দলের কাছেই। দার্জিলিং হোক বা জলপাইগুড়ি—সাংসদেরা যে উন্নয়নের কথা একেবারেই বলছেন না, তা নয়। সংসদে দাঁড়িয়ে বা সরকারের অন্দরে এমস থেকে জনজাতির স্বীকৃতির মতো নানা দাবি তুলছেন। আগেও তুলেছেন। কিন্তু বাস্তবে সে সবের রূপায়ণ হয়নি।

কী হয়েছে তা হলে? এ সব আসন দখলের তাগিদে দিল্লির সরকার বছরের পরে বছর শুধু অঙ্ক কষেছে। আর তাদের জনপ্রতিনিধি জেতার পরে, তাঁদের শুধু আঞ্চলিক দাবির জিগির তোলার কৌশল শেখানো হচ্ছে, আঞ্চলিক শাসক দলের বিরোধিতা করার রাজনীতি শেখানো হচ্ছে। উন্নয়নের কাজ কোথায়? এক বার ভোটে জিতে গেলে সে সবের থেকে শত যোজন দূরে! এটাই দেখে আসছে পাহাড়।

Advertisement

উত্তরবঙ্গ ‘অবহেলিত’, ‘বঞ্চিত’, ‘পিছিয়ে পড়া’— এ সব বার বার বলে মানুষের থেকে সমবেদনার থেকে সমর্থন আদায়ের রাজনীতি এখন বেশি জনপ্রিয়। কারণ, ডান থেকে বাম বা অতি ডান—কেউই প্রকৃত সদিচ্ছা নিয়ে পুরোপুরি এগোতে চায়নি। বিভিন্ন কর আদায়ের হিসাব, সরকারি অনুদানে বৈষম্য আজও প্রকট। সেখানে দাবিদাওয়া, আবেগ বাঁচিয়ে রাখলে বরং, ভোট-যন্ত্রের আলো বেশি নিজেদের পক্ষে জ্বালানোর সম্ভাবনা থাকে। এই আঞ্চলিক আবেগের ভিত্তিতে রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। রাজ্যের শাসকও রাজনীতিতেই ব্যস্ত। বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের প্রচারে বিভাজন-রাজনীতির প্রতিবাদ আদতে বিধানসভার আগে কৌশলী অঙ্গ, মনে করাই যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী হোন বা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়—বিধানসভা দু’জনেই ভোট দামামা বাজাচ্ছেন। আর উন্নয়ন? জবাব সাধারণ মানুষই দিতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement