উপাচার্যের ঘরে বিক্ষোভ তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের। ছবি: গৌর আচার্য।
রাজ্যের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপাল তথা আচার্যের সংঘাতকে কেন্দ্র করে মামলা চলছে। সেই মামলার খরচ বাবদ রাজ্যপালকে ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। ওই টাকা ফেরত-সহ একাধিক দাবিতে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলনে উত্তেজনা ছড়াল। তার আগে লাঠি নিয়ে এবিভিপি সমর্থকদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির সদস্যেরা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। এর পরে, তাঁরা উপাচার্য দীপককুমার রায়ের ঘরে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন। উপাচার্য এ দিন ছুটিতে থাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। ঘণ্টা দুয়েক ওই আন্দোলন চলার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রশান্তকুমার মহালা উপাচার্যের ঘরে গিয়ে শিক্ষাকর্মীদের স্মারকলিপি নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। প্রশান্ত বলেন, “উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে, তাঁর হাতে শিক্ষাকর্মীদের দাবিপত্র তুলে দেওয়া হবে। তিনি যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবেন।” উপাচার্য দীপকের দাবি, তিনি সেমিনারে ব্যস্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তার দাবি, রাজ্য এবং রাজ্যপালের মধ্যে মামলায় অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দীপককে শামিল করানো হয়েছে। তাই ওই মামলায় আইনজীবীদের খরচ বাবদ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ৪০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে।
এ দিন তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির জেলা সভাপতি তপন নাগ অভিযোগ করেন, দীর্ঘ দিন ধরেই চুক্তিভিত্তিক শিক্ষাকর্মীদের বেতন বাড়েনি। তাঁদের স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা নিয়মিত বেতন পান না। তপন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নাকি আর্থিক সঙ্কট চলছে। অথচ, উপাচার্য দীপকবাবু রাজ্য সরকারের তরফে প্রাপ্ত তহবিলের ৪০ হাজার টাকা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলার খরচ চালানোর জন্য রাজ্যপালকে দিয়েছেন। উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন অধ্যাপক বিশ্ববিদ্যালয়কে বিজেপির পার্টি অফিসে পরিণত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে টাকা ফেরতের দাবিতে আন্দোলন চলবে।”
রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর অভিযোগ, এ দিন তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলনের আগে তৃণমূল কর্মীরা লাঠি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঘুরে এবিভিপির সমর্থকদের হুমকির পাশাপাশি নেতাদের খোঁজে তল্লাশি চালান। শহর তৃণমূলের সহ সভাপতি তপনের পাল্টা দাবি, আসল ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতে বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখলেই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হবে।