প্রতীকী চিত্র
রাজ্য বাজেটের আগে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর কাছে উত্তরবঙ্গের জন্য একাধিক প্রস্তাব পাঠিয়েছে উত্তরবঙ্গের বৃহত্তর ব্যবসায়ী সংগঠন ফোসিন। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গে জিএসটি হেল্পডেস্ক চালু, খুচরো ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধের মতো প্রস্তাব রয়েছে। জানুয়ারিতেই রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের কাছে রাজ্য বাজেটে বিভিন্ন সুবিধা রাখার আবেদন জানিয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
ফোসিনের তরফে জানান হয়েছে, দেশের অর্থনীতি মন্দার দিকে ঝুঁকে। সেই কারণে ব্যবসায়ী এবং উদ্যোগীরা চিন্তায় পড়েছেন। টাকার জোগান এবং চাহিদা কমায় অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন কমানো হচ্ছে। কেনাবেচার পরিমান ৩০ শতাংশ কমেছে। সেই কথা মাথায় রেখেই বর্তমান পরিস্থিতিতে খুচরো ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বাজারে টাকার জোগান বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। অনুরোধ করা হয়েছে, জিএসটি সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য শিলিগুড়িতে ‘হেল্প ডেস্ক’ চালু করতে। ই-ওয়েবিল চালু করা ও জিএসটি সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাব জানানো হয়েছে। কর সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলার শুনানির জন্য দার্জিলিঙে শিবির করে সেই কাজ করা হলে ভাল হয় বলে প্রস্তাব ফোসিনের। কেন্দ্র বা রাজ্যের কোনও ‘ট্রেড পলিসি’ নেই। সেটা করাও জরুরি বলে জানান হয়েছে।
ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্থবেঙ্গল (ফোসিন)-এর সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস জানান, বিদেশি বিনিয়োগের জেরে সব চেয়ে বেশি সমস্যা পড়েছেন খুচরো ব্যবসায়ীরা। বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ব্যাপক ছাড় দিয়ে থাকে। যা সাধারণ দোকানিদের পক্ষে তা সম্ভব নয়। এরফলে গ্রাহকরা ছাড়ের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন। এই অভ্যেসের কারণে খুচরো ব্যবসায়ী বা ছোট দোকানিরা সমস্যায় পড়ছেন বলে ফোসিনের দাবি।
বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘সে কারণে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনলাইনে ব্যবসা, কোনও বিশেষ ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে একশো শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধ করা হোক। অনলাইনে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের নীতি করা হোক। ছোট, মাঝারি এবং ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে ভাল ‘ইনসেনটিভ’ প্রকল্প নেওয়া হোক। অর্থমন্ত্রীকে বাজেটের আগে এই বিষয়গুলো বিবেচনার আর্জি জানানো হয়েছে।’’ কেন্দ্রের কাছে তারা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু বাজেটে অনেক সুবিধাই মেলেনি। তাই রাজ্য বাজেটের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
ফোসিনের তরফে জানানো হয়েছে, ব্যবসায়ীদের কারবার বৃদ্ধি করতে প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার মতো বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ পাওয়ার সুযোগ থাকলেও তা মেলে না। মূলত ব্যাঙ্কগুলো সমস্যা করে। সেই বিষয়টি দেখার আবেদন করা হয়েছে। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য আরও বেশি বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। একই ভাবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাবও দিয়েছেন তারা। উত্তরবঙ্গের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশেষ প্যাকেজ ও অন্যান্য ছাড় দেওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।