করোনেশন সেতু। ফাইল চিত্র।
কেন্দ্র-রাজ্য টালবাহানায় এমনিতেই কেটে গিয়েছে ছ’টা বছর। শেষপর্যন্ত এ বছর নভেম্বরে রেল জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করলেও তিস্তার উপর নতুন প্রস্তাবিত সেতু তৈরির কাজের কিছুই এগোয়নি। এ নিয়ে রাজ্যের প্রতিনিধিদের দাবি, নীতিগত সিদ্ধান্ত হলেও প্রস্তাবিত সেতুর বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ হয়নি। তবে প্রস্তুতি চলছে বলে ইঙ্গিত তাঁদের।
যত দিন এগোচ্ছে, ততই বাড়ছে করোনেশন সেতুর ঝুঁকি। যদিও এই সেতুর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ২০১৪ সাল থেকে তিস্তার উপর নতুন ব্রিজ তৈরির প্রস্তাব নিয়ে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের আলোচনা শুরু হয়। রাজ্যের দাবি, দীর্ঘদিন থেকেই তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কাজ করার উদ্যোগ দেখিয়েছে। কিন্তু, সেবক বাজার থেকে ডুয়ার্সের এলেনবাড়ি পর্যন্ত প্রস্তাবিত দ্বিতীয় সেতুর কাজ নিয়ে প্রথম থেকেই ঢিলেমির অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিরুদ্ধে।
তবে রেলের তরফে দাবি করা হয়েছে, চলতি মাসেই একটি যৌথ পরিদর্শন সেরে কতটা জমি প্রস্তাবিত সেতু এবং তার অ্যাপ্রোচ রোডের জন্য দেওয়া যাবে, তা রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘আমরা তো সব বলে দিয়েছি। তারপর আর রাজ্যের তরফে কিছু আমাদের জানানো হয়নি।’’ অন্যদিকে, রাজ্য পূর্ত দফতরের এক বাস্তুকার বলেন, ‘‘রেল নীতিগত ভাবে জমি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তার পরে আর গ্রুপ অফ মিনিস্টারের বৈঠক হয়নি বলে এখনও নকশা তৈরির কাজ জোরকদমে শুরু করা যায়নি।’’
তবে এই দায় ঠেলাঠেলি থেকেই বারবার এলাকায় ক্ষোভ বাড়ছে। নতুন সেতুর দাবিতে তৈরি সামাজিক সংগঠন ডুয়ার্স ফোরাম ফর সোশ্যাল রিফর্মস নতুন করে আন্দোলনে নামারও হুমকি দিয়েছে। সংগঠনের সম্পাদক চন্দন রায় বলেন, ‘‘আমাদের ডুয়ার্স এবং উত্তরবঙ্গ জুড়ে ১২টি ইউনিটের তরফেই আন্দোলনে নামার চাপ দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা তার আগে একবার রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই।’’ সংগঠনের দাবি, কেন্দ্র-রাজ্য ঠান্ডা লড়াইয়ের শরিক তাঁরা হতে চান না। তবে উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য দ্রুত সেতু চান।
কয়েকদিন আগে উত্তরবঙ্গে রাজ্যপাল এসেই তিস্তার উপর নতুন প্রস্তাবিত সেতু নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি রাজ্যের অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন। তখনই কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যপালের বিরোধিতায় একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করে রাজ্য পূর্ত দফতর।