খোঁজ: আধার কার্ড সংশোধনের কাজ চলছে জলপাইগুড়ি মুখ্য ডাকঘরে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লোকসভায় পাশ হতেই জেলায় এনআরসি আতঙ্ক আরও বেড়েছে এবং এর সরাসরি প্রভাব এসে পড়ছে আধার কার্ড সংশোধনীতে।
কার্ড সংশোধন করতে প্রতিদিনই আলিপুরদুয়ারের ডাকঘর ও বেসরকারি একটি ব্যাঙ্কের শাখায় সকাল থেকেই ভিড় বাড়ছে। কিন্তু অভিযোগ, আগে থেকে নাম লেখানো না থাকায় অনেককেই খালি হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে। ফলে মনে আতঙ্ক নিয়েই বাড়ি ফিরছেন অনেকে।
অসমে এনআরসি চালু হতেই আলিপুরদুয়ারে বাড়ির পুরনো দলিলপত্র খুঁজে বের করা থেকে শুরু করে রেশন কার্ডে নাম সংশোধনের হিড়িক পড়ে যায়। একই ভাবে গত কয়েকমাস ধরে আধার কার্ড সংশোধন বা নতুন আধার কার্ড তৈরির হিড়িকও পড়েছে।
সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার শহরে সাব পোস্ট অফিস ও একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে এই মুহূর্তে আধার কার্ড তৈরি ও সংশোধনের কাজ চলছে। প্রতিদিন সকাল থেকেই সেগুলিতে, বিশেষ করে ডাকঘরে প্রচুর মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। কিন্তু আগে থেকে নাম লেখানো না থাকায় তাঁদের অনেককেই ফিরে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
ওই ডাকঘরের এক কর্মী জানালেন, সংসদে নতুন বিল পাশ হওয়ার পর ডাকঘরে মানুষের ভিড় বেড়েছে। কিন্তু ৫ নভেম্বর পর্যন্ত যাঁরা নাম লিখিয়ে গিয়েছেন, প্রতিদিন সেই তালিকা থেকে দশ-পনেরোজনকে ডেকে নিয়ে নতুন আধার কার্ড তৈরি বা সংশোধনের কাজ হচ্ছে। তিনি আরও জানালেন, নতুন করে নাম নেওয়া আবার শুরু হবে ১০ জানুয়ারি। ফলে এখন যারা প্রথমবার এসে ভিড় জমাচ্ছেন, তাদের ওই সময় আসতে বলা হচ্ছে।
কিন্তু একবার নাম লেখালেও যে দুর্ভোগ কাটছে, তা নয়। কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়ির বড় রংরস গ্রামের বাসিন্দা তাপসী সিংহরায় বর্মণের অভিযোগ, “সবাই বলছে এনআরসি হলে সমস্ত কাগজপত্র দেখাতে হবে। সেজন্যই মেয়ের নতুন আধার কার্ড তৈরির জন্য তিন মাস আগে আলিপুরদুয়ারের ব্যাঙ্কে নাম লিখিয়েছিলাম। বুধবারও এসে খোঁজ নিলাম। কবে হবে কেউ জানাতে পারছেন না।” আলিপুরদুয়ার জংশনের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ সরকার বলেন, “সেপ্টেম্বরে বাড়ির একজনের আধার কার্ড সংশোধনের জন্য নাম লেখানো হয়েছিল। এতদিন পর বুধবার তা হয়েছে। ব্যাঙ্কে শুনলাম, প্রচুর নাম এখনও জমে রয়েছে।” তবে ব্যাঙ্কের এক কর্মী জানান, দুই সপ্তাহ আগে পর্যন্তও তাঁরা আধার কার্ড সংশোধনের জন্য নাম নিয়েছেন। ফের দিনকয়েকের মধ্যে নাম নেওয়া শুরু হবে। সব শুনে এক বৃদ্ধের মন্তব্য, “কিন্তু ততদিন অপেক্ষা করা যায় কী করে? সবাই যে আতঙ্কিত!”