গজলডোবায় ‘ভোরের আলো’ পর্যটন কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের মেগা টুরিজম হাব ‘ভোরের আলো’ বা গজলডোবায় একটি পর্যটন প্রকল্প আপাতত বাস্তবায়িত করা গেল না। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পর্যটনে আকর্ষণ বাড়াতে ‘সেন্ট্রাল পন্ড’ বা পুকুর ঘিরে চারটি ‘ফিশিং ডেক’ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যটন দফতরের দরপত্র (টেন্ডার) সংক্রান্ত কাজ হয়। প্রায় ন’লক্ষ টাকা এর জন্য বরাদ্দ করা হয়। কাজ শুরুর এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা বরাদ্দও করে দেওয়া হয়। কিন্তু ২৭ মার্চের সময়সীমার মধ্যে এই কাজে ইচ্ছুক কোনও সংস্থার সাড়া পায়নি পর্যটন দফতর। তার পরে বিভাগীয় স্তরে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত, গত ১০ এপ্রিল প্রকল্পটি বাতিল বলে দফতরের তরফে নির্দেশিকাজারি করা হয়।
‘ভোরের আলো’য় প্রকল্প বাতিলের খবর পৌঁছেছে ‘নবান্ন’-এও। মুখ্যমন্ত্রীর নামকরণ করা এবং নজরে থাকা ক্ষেত্রে প্রকল্প বাতিলের ঘটনা সচরাচর ঘটেনি। এ বিষয়ে পর্যটন দফতরের দফতরের এক যুগ্ম সচিবের মন্তব্য, ‘‘গজলডোবায় নানা ধরনের প্রকল্পের কাজ হচ্ছে। সেখানে একটি কাজ না হতেই পারে। কম পক্ষে তিনটি দরপত্র জমা পড়াটা জরুরি। তা হয়নি বলে বাতিল হয়েছে। পরে, বিষয়টি ফের খতিয়ে দেখে কাজ হতে পারে।’’
দফতরের কিছু কর্তা মনে করছেন, ‘ফিশিং ডেক’ বিদেশে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দিঘি বা বড় পুকুর ঘিরে তৈরি হয়। মাছ ধরার মতো প্রয়োজনীয় পরিসর সেখানে থাকে। সে সঙ্গে পর্যটকদের দাঁড়ানোর জায়গা, প্রকৃতি-পরিবেশ উপভোগ করার ব্যবস্থা, সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখার স্থান বা প্রাতরাশের ব্যবস্থা— এ সব থাকে। গজলডোবাতেই বহু বেসরকারি রিসর্টে মাছ ধরা এবং পুকুরের ধারে বসে সময় কাটানোর সুন্দর বন্দোবস্ত রয়েছে। সেখান থেকেই পরিকল্পনা করে ‘ফিশিং ডেক’ তৈরির কথা ভাবা হয়েছিল। মাছ ধরার বিষয়টি চূড়ান্ত হলে তাতে অবশ্যই মৎস্য দফতরের সহযোগিতা জরুরি ছিল।
সরকারি সূত্রের খবর, গজলডোবার ‘ভোরের আলো’য় একাধিক কটেজ, ডুপ্লেক্স কটেজ তৈরি হয়ে গিয়েছে। পর্যটকেরা নিয়মিত সেখানে থাকছেন। প্রকল্পের মধ্যে বিরাট এলাকা জুড়ে রয়েছে বাগান, রেস্তরাঁ। রয়েছে একটি বড় জলাশয়। একটি ‘ভিভিআইপি কটেজ’ও রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এলে, সেখানে থাকেন। এর পাশেই পুকুরকে ঘিরে চারটি ‘ফিশিং ডেক’ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাড়ের মাটি এবং পুকুরের মধ্যে ক্রংক্রিট, কাঠ, লোহা ব্যবহার করে তা তৈরির কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু এই কাজে পারদর্শী সংস্থা উত্তরবঙ্গে কমই রয়েছে। আবার চারটি ‘ফিশিং ডেক’ মাত্র ন’লক্ষ টাকায় তৈরি করা যাবে কি না, সে বিষয়ে বিভিন্ন সংস্থা খোঁজ নিয়ে পিছিয়ে আসে বলেও সূত্রের খবর।