—ফাইল চিত্র।
সুজাপুরের পুরোন প্লাস্টিকের কারখানাগুলিকে এক ছাতার তলে এনে ক্লাস্টার করে ‘কমন ফেসিলিটি সেন্টার’ গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। বছর দুয়েক আগে এ জন্য সুজাপুরের পুরোন প্লাস্টিকের কারবারিরা মিলে একটি কো-অপারেটিভ সোসাইটিও গঠন করেছিল। ওই সেন্টার করার জন্য সুজাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের কাছাকাছি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে এক বিঘার বেশি জমিও চিহ্নিত করা হয়। সেইমতো ‘কাউন্সিল অফ সাইন্টিফিক অ্যাণ্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ-ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরি’ সংস্থা একটি বিস্তারিত প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করেছিল। প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বছরের জানুয়ারি মাসে এই সেই ডিপিআর রাজ্যের অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগ (এমএসএমই) দফতরে পাঠিয়ে ছিল মালদহ জেলা শিল্পকেন্দ্র। কিন্তু অভিযোগ, তারপর আর বিশেষ কিছুই এগোয়নি। সুজাপুরের একটি প্লাস্টিক কারখানায় বিস্ফোরণের পর সেই কমন ফেসিলিটি সেন্টার দ্রুত গড়ে তোলার দাবি উঠেছে। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, বিষয়টি রাজ্য এমএসএমই দফতরে বিবেচনাধীন রয়েছে।
মালদহের কালিয়াচক ১ ব্লকের সুজাপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ৫০টিরও বেশি পুরনো প্লাস্টিকের কারবারের গুদাম রয়েছে। সেগুলির মধ্যে অন্তত ২০টিতে রয়েছে প্লাস্টিক কাটিং মেশিন-সহ কারখানা। সেই কারখানা চালাতে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিলেও বাকি ক্ষেত্রে নানা বেনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সুজাপুরের একটি কারখানায় বিস্ফোরণ হয় এবং তাতে ৬ জন শ্রমিক মারা যান। আহত হন আরও সাত শ্রমিক। সেই বিস্ফোরণে রহস্য নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। রাজ্যের ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে গেলেও এখনও কোনও রিপোর্ট আসেনি।
জানা গিয়েছে সুজাপুরের এই কারখানাগুলির কারবারিদের এক করে ‘সুজাপুর ওয়েস্ট প্লাস্টিক প্রসেসিং ক্লাস্টার’ গঠন করে ওই কমন ফেসিলিটি সেন্টার গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সুজাপুরের প্রায় ৪০ জন পুরোন প্লাস্টিকের কারবারি মিলে ‘এসজিএমজে ইন্ডাস্ট্রিয়াল কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ নামে একটি সোসাইটি গঠন করে। জেলা শিল্প কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়কের পাশে এক বিঘার বেশি জমিতে ফেসিলিটি সেন্টার গড়ার জন্য সিএসআইআর-ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরি প্রায় পৌনে চার কোটি টাকার একটি ডিপিআর তৈরি করে। রাজ্য এমএসএমই দফতরে এ বছরের জানুয়ারি মাসের ৬ তারিখ তা পাঠানোও হয়।
প্রস্তাবিত সেই সেন্টারে পুরনো প্লাস্টিক থেকে সাধারন টাইলস, পেভার টাইলস, রুফ টাইলস ও প্লাস্টিকের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির প্রস্তাব ছিল। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য এমএসএমই দফতর থেকে অর্থ বরাদ্দ করলেই সেই সেন্টার গড়ার কাজ শুরু হতে পারে।’’