নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই পঠনপাঠন লাটে তুলে দরজায় তালা ঝুলিয়ে বাড়ির পথ ধরছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ। এই রেওয়াজই ধরা পড়ল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ কর্তাদের আচমকা পরিদর্শনে। ১১ মার্চ দুপুর নাগাদ জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের কয়েকটি স্কুলে পৌঁছে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে সংসদ কর্তাদের। তাঁরা জানান, বেলা ২টোর মধ্যে শিক্ষকরা ছুটি দিয়ে বাড়ি ফিরে যান। এই ঘটনায় পাঁচটি স্কুলের শিক্ষকদের শো-কজের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাঁদের ওই দিনের বেতন কাটার মতো শাস্তি দেওয়া যায় কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তৃণমূল চেয়ারম্যান ধৃতিমোহন রায় বলেন, “আগামী সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষকদের হাতে শো-কজের চিঠি পৌঁছে যাবে। সাত দিন সময় দেওয়া হবে। সন্তোষজনক উত্তর না পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনও রকম রাজনৈতিক পরিচয় বরদাস্ত হবে না।” এই ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের পাশে দাঁড়িয়েছে নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। সংগঠনের জেলা সম্পাদক বিপ্লব ঝা বলেন, “সংসদ কর্তারা প্রতি দিন স্কুল পরিদর্শন করুন। নির্দিষ্ট সময়ের আগে স্কুল ছুটি দিয়ে শিক্ষকদের বাড়ি চলে যাওয়া মোটেও সমর্থনযোগ্য নয়।” পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা কমিটির সহ-সভাপতি স্মরজিত্ চাকীর মতে, “দল বেঁধে সবাই নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে ছুটি দিয়ে বাড়ি ফিরবেন, এটা কেউ মানবে না। কোথাও অন্যায় হলে শিক্ষা সংসদ ব্যবস্থা নিক।”
সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১ মার্চ বেলা দেড়টা নাগাদ জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক-সহ কয়েক জন কর্তাকে নিয়ে সদর ব্লকের পশ্চিম সার্কেলের প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শনে বেরোন ধৃতিমোহনবাবু। বেলা ৩টে পর্যন্ত সাতটি স্কুলে যান। পাঁচটি স্কুল বন্ধ দেখে ফিরতে হয়। ধৃতিমোহনবাবু জানান, উত্তর বড়ালবাড়ি ও ফোদরপাড়া প্রাথমিক স্কুল খোলা ছিল। কিন্তু চণ্ডীডাঙা, মিরাঠিপুকুরি, সিঙ্গিমারি, সিঙ্গিমারি উত্তরপাড়া এবং বাসুয়াপাড়া স্কুল ঘুরে মাথায় হাত পড়ে তাঁদের। ওই সব স্কুলের শিক্ষকরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। বাসুয়াপাড়া প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “সংসদের চিঠি পেয়ে যা বলার বলব।”