প্রতীকী ছবি।
শুধু বেআইনিভাবে চাকরি ‘বিক্রি’ নয়, বদলি ও পদোন্নতির জন্যও টাকা দেওয়া-নেওয়ার খেলা চলে বলে ইতিমধ্যেই দাবি করেছে ইডি। এ বার আলিপুরদুয়ার জেলাতেও উঠল একই অভিযোগ। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনের দাবি, কোনও নিয়ম-নীতি ছাড়া একের পর এক শিক্ষক বদলির ফলে গ্রামাঞ্চলের স্কুল ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। যার প্রভাব পড়াশোনায় পড়েছে। অভিযোগ, শাসকদল কিংবা তাদের শিক্ষক সংগঠনের একাধিক নেতা-নেত্রী তো বটেই বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্ণধারেরও এই বদলির পেছনে রয়েছেন। একটা সময় আলিপুরদুয়ারে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রে চালু প্রথার ব্যাতিক্রম ঘটার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন শিক্ষা দফতরের কর্তাদের একাংশও।
ইডি-র হাতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়া নিয়ে রাজ্যজুড়ে হইচই চলছেই। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে এই দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পর আলিপুরদুয়ারেও শাসকদল কিংবা তাদের শিক্ষক সংগঠনের একাধিক নেতা-নেত্রী চর্চায় চলে এসেছেন। কারও কারও নামে শহরে পোস্টার পড়েছে। আবার কয়েক জনকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে সমালোচনা। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে অর্থের বিনিময়ে বদলির ফলে গ্রামাঞ্চলের অনেক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা ব্যাপকহারে কমে গিয়েছে। বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায়ের অভিযোগ, “বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার আগে প্রায় মাস দুয়েক ধরে প্রায় প্রতিদিনই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে বদলির তালিকা বার হতো। কোন নিয়ম-নীতি ছাড়া একের পর এক শিক্ষক বদলি হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের স্কুল ফাঁকা হয়ে গিয়ে পড়াশোনায় প্রভাব পড়েছে। শোনা যাচ্ছে, এর পিছনেও ছিল এজেন্ট-রাজ ও টাকার খেলা। বিষয়টি নিয়ে সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”
খোদ জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রে স্কুল থেকে এনওসি ও শিক্ষা দফতর থেকে সুপারিশ এসএসসি-তে পাঠানো হয়। তার পর এসএসসি-র সেই সুপারিশ মধ্যশিক্ষা পর্ষদে পাঠায়। সেই অনুযায়ী বদলির নির্দেশ বার হয়। কিন্তু করোনা অতিমারির প্রথম ধাক্কার পর অনেক শিক্ষকের বদলির ক্ষেত্রে এই নিয়ম দেখা যায়নি। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আশানুল করিম বলেন, “এটা বাস্তব যে, একটা সময় স্কুল কর্তৃপক্ষের এনওসি ও জেলা শিক্ষা দফতরের সুপারিশ ছাড়া অনেক শিক্ষকের বদলি হয়েছে। যার জেরে গ্রামাঞ্চলে অনেক স্কুল প্রভাবিত হয়েছে।” বিচারাধীন বিষয় বলে অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য এড়িয়েছেন ডিপিএসসির কর্তারা।