ভাল মানের পাতায় টান, বাড়ল চায়ের দাম 

দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর গোড়ায় ‘সিটিসি’ চায়ের নিলামে দাম মিলেছে প্রতি কেজিতে ১৮৮ টাকা, গত বছর এই সময়ে যে পাতার দাম গড়পড়তা ছিল ১৮০ টাকা।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪ ০৮:৩৪
Share:

স্বস্তির বৃষ্টিতে সবুজ হল চা বাগান জলপাইগুড়িতে। ছবি - সন্দীপ পাল।

দ্বিতীয় ফ্লাশের চা পাতায় ‘লক্ষ্মী লাভ’ হচ্ছে উত্তরবঙ্গের বাগানগুলির। নিলামে গত বছরের থেকে বেশি দাম মিলছে দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর চা পাতার। আবহাওয়ার খামখেয়ালে এ বছর প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর চা পাতা দার্জিলিং পাহাড় থেকে ডুয়ার্স-তরাই সর্বত্র উৎপাদনে মার খেয়েছে। বৃষ্টির অভাবে দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর উৎপাদন আদৌ হবে কি না, তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছিল। যদিও দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর গোড়াতেই বৃষ্টি হাসি ফুটিয়েছিল চা মহল্লায়। দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর উৎপাদনের পরে দেখা যাচ্ছে, দামও বেশি, যা গত বছরকেও পিছনে ফেলেছে। যদিও এই ‘লক্ষ্মী লাভ’ চায়ে সঙ্কট কাটার লক্ষণ নয় বলেই দাবি। উল্টে, উদ্বেগ বাড়িয়েছে চা মহলের একাংশের। চা শিল্পের দাবি, বৃষ্টিতে দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’ রক্ষা পেলেও উৎপাদন কমেছে। বিশেষত, ভাল মানের চা পাতার উৎপাদন কমেছে। ফলে, ভাল চা পাতার জোগান নিয়ে টানাটানি রয়েছে, তাতেই দাম বেড়েছে। দাম বৃদ্ধি চা শিল্পকে এই পরিস্থিতিতে অক্সিজেন দিলেও, উদ্বেগেও রেখেছে।

Advertisement

দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর গোড়ায় ‘সিটিসি’ চায়ের নিলামে দাম মিলেছে প্রতি কেজিতে ১৮৮ টাকা, গত বছর এই সময়ে যে পাতার দাম গড়পড়তা ছিল ১৮০ টাকা। শেষ দু’টি নিলামে ১৯২ টাকা কেজি প্রতি এবং শেষ নিলামে ২১২ টাকা কেজি প্রতি দাম পেয়েছে দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর চা পাতা, যা গত বছরের থেকে কেজিতে ২৬ টাকা বেশি। বছরের গোড়া থেকে সঙ্কটের মুখোমুখি হয়ে চায়ের বাজার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে চা বাগানের পরিচালকদের একাংশের তরফে। যদিও পাল্টা দাবি, বেশিরভাগ চা বাগানের পাতার মান ভাল নয়, পাতাও কম। কাজেই পাতা জোগানের ঘাটতি হয়েছে। সে কারণেই চাহিদা-জোগানের সূত্র অনুযায়ী দাম বেড়ে চলেছে। ডুয়ার্সের চা রফতানি হয়নি। দেশের বাজারে দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর চাহিদা বেশি থাকে। বিশেষত, পশ্চিম ভারতে ডুয়ার্সের কড়া-ঘন লিকারের ‘সিটিসি’ চায়ের কদর বেশি।

চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পাণ্ডে বলেন, “দ্বিতীয় ফ্লাশের দাম ভালই পাওয়া যাচ্ছে। বাজার বেশ স্থায়ী বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু পাতার জোগান কম। ভাল মানের পাতা বেশি পাওয়া যাচ্ছে না, সে কারণে দাম বেড়ে যাচ্ছে। এটা ভাবনার বিষয়।”

Advertisement

নিলামে দাম ভাল উঠলেও, ছোট চা বাগানের পাতার দাম অনেকটাই কম। ছোট চা বাগানগুলিকে ১৪ থেকে ১৬ টাকা কেজিতে কাঁচা পাতা কারখানায় বিক্রি করতে হচ্ছে। অতিবৃষ্টির কারণে উৎপাদন কমেছে ছোট বাগানেও। পাল্লা দিয়ে কমেছে মানও। ছোট চা বাগানের সর্বভারতীয় সংগঠনের (সিস্টা) কার্যকরী সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “এখন পাতার যা টানাটানি, তাতে কেজিতে ৪০ টাকা দাম পাওয়া উচিত। কিন্তু অনেক কম দাম পাচ্ছি। বৃষ্টি আরও নানা কারণে পাতার মান নিয়েও প্রশ্ন আছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement