—ফাইল চিত্র
খোলাবাজারে আলুর চড়া দামে হাত পুড়ছে ক্রেতাদের। বাজারে আলুর দামের চেয়ে তার বীজের দাম দ্বিগুণ। তাতে নাজেহাল চাষিরাও। বীজের চড়া দামের প্রভাব পড়ছে আলু চাষে। শিলিগুড়ি মহকুমার অনেক চাষি তার জেরে আলু চাষ কমিয়ে দিচ্ছেন বলে দাবি। গত বছরের তুলনায় এ বছর আলু চাষ কম হলে নতুন আলুর দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
গত মরসুমের শেষের দিকে আলুর ভাল দাম পেয়েছিলেন চাষিরা। অনেকে এক বারের বীজ থেকে ২-৩ বার চাষ করে থাকেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, আলুর ভাল দাম পাওয়ায় অনেক চাষি বীজের জন্য আলু না রেখে বিক্রি করে দেন। তার জেরে এ বার বেশিরভাগ চাষিকেই দোকান থেকে বীজ কিনে চাষ করতে হচ্ছে।
প্রতি কিলোগ্রাম আলুর বীজ ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে শিলিগুড়ি মহকুমার খড়িবাড়িতে। ব্যবসায়ীদের দাবি, বেশিরভাগ বীজ পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ থেকে আসে। কিছু ভুটান থেকেও আসে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। বাজারে আলুর দামের কারণে বীজ তৈরির অনেক ছোট সংস্থা তাদের কাছে মজুত আলু বিক্রি করে দিয়েছে বলে দাবি। তাতে চাপ পড়েছে বীজের জোগানে। এ বছর পরিবহণ খরচও আগের বছরগুলির তুলনায় অনেকটাই বেশি পড়ছে। তাতেও স্থানীয় বাজারগুলিতে বীজের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি।
চাষিদের দাবি, বর্তমান দরের হিসেবে এক বিঘা জমিতে ২০ হাজার টাকার বীজ প্রয়োজন। সারের দামও চড়া। তাতে বিঘা প্রতি আলু চাষে ৩০ হাজার টাকা লাগছে। লকডাউনে অনেক চাষিকে দেনা করে চলতে হয়েছে বলে দাবি। তার পরে অনেকের পক্ষে এত খরচ করা সম্ভব নয় বলে দাবি। মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, সমস্ত মহকুমায় গত বছর ১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এ বছর চাষের পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। খড়িবাড়ির সহ-কৃষি অধিকর্তা ঠাকুরদাস কার্জি বলেন, ‘‘বীজের দামের জেরে অনেক চাষি সমস্যায় পড়ছেন।’’
শিলিগুড়ি মহকুমায় আলু চাষ কম হয়। ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি এবং উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার আলু দিয়ে শহরের মানুষের আলুর জোগান মেটে। শহরবাসীর অনেকের বক্তব্য, এ বার স্থানীয় আলুর চাষ কম হলে আরও দামবৃদ্ধির আশঙ্কা থাকছেই।