যেন মেঘ না চাইতেই জল। অর্থাভাবে রোগী পরিষেবার অনেক কাজই হতে বিলম্ব হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। কিছু দিন আগেই টাকার সমস্যায় সিটি স্ক্যান মেশিন কেনার বিষয়টি ঝুলে ছিল। অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে হৃদরোগের চিকিৎসার পুরনো ইকো কার্ডিওগ্রাফ যন্ত্র। ঠিক সে সময় অযাচিত ভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে যন্ত্রাংশ কেনা-সহ উন্নয়ন কাজে ৬-৮ কোটি টাকা দিতে এগিয়ে এল পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন।
ইতিমধ্যেই ইকো কার্ডিওগ্রাফ যন্ত্র কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করে পাঠানো হয়েছে। অন্য আর কী কী প্রয়োজন সে জন্য বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছে।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন পাওয়ার গ্রি়ড কর্পোরেশন টাকা দিলেও সরকারের তরফে অনুমতিও নিতে হবে। ইকো কার্ডিওগ্রাফ কেনার বিষয়টি ইতিমধ্যেই অনুমোদন করেছে সরকার। কলেজের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় বলেন, ‘‘কলেজ এবং হাসপাতালে রোগী পরিষেবার যে সমস্ত ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি বা অন্য কিছুর খামতি রয়েছে এই অর্থ সেই কাজে ব্যবহার করা হবে।’’
কর্পোরেশনের ম্যানেজার (এইচআর) শিবাশিস বসু জানান, তাঁদের তরফেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার সুদীপ দত্ত প্রস্তাবটি পাঠিয়েছিলেন। কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি খাতে তাঁরা ওই কাজের জন্য সাহায্য করতে চান। শিবাশিসবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে বিস্তারিত জানালে সেই মতো দেখা হবে।’’ এর আগে কলকাতার একাধিক হাসপাতালের ক্ষেত্রেও তাঁরা একই ভাবে সাহায্য করেছেন।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের যা ভাবা হয়েছে তার মধ্যে, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিটি মডেল হিসাবে গড়ে তোলা। কেউ চাইছে মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরির উন্নয়ন। আবার কেউ চাইছেন ল্যাপ্রস্কোপি যন্ত্র কেনা হোক। সিটি স্ক্যান যন্ত্রের জন্য ইতিমধ্যেই টেন্ডার করা হযেছে। সে জন্য আপাতত এখান থেকে অর্থ নেওয়ার প্রয়োজন থাকছে না। ট্রমা সেন্টারের যন্ত্রাংশের জন্য সরকারি অর্থ মিলবে। তাই বিভাগীয় প্রধানদের তালিকা পেলে কোনগুলো সরকারি খাতে মিলছে তা বাদ দিয়ে বাকি বিষয়গুলোর জন্যই ওই অর্থ ব্যবহারে জোর দিতে চান কর্তৃপক্ষ।
অধ্যক্ষের দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিভাগীয় প্রধানদের কাছ থেকে খসড়া তালিকা চেয়ে তা থেকে পরিকল্পনার কথা স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন পেলে সেই মতো কাজ হবে।
হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগ সূত্রেই জানা গিয়েছে, বর্তমানে যে ইকো কার্ডিওগ্রাফ যন্ত্র রয়েছে তা পুরনো। পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। তাতে রোগী পরিষেবা দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় চিকিৎসকদের। ওই বিভাগের অধ্যাপক সুব্রত বসু বলেন, ‘‘আমরা অত্যাধুনিক ইকো কার্ডিওগ্রাফ যন্ত্র কেনার জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। সেটির দামও প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার মতো। ওই যন্ত্র বতর্মানে কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও নেই। তা পেলে উন্নত রোগী পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে।’’