—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দক্ষিণ ভারতে আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের পরোক্ষ প্রভাবে বুধবার রাত থেকেই হালকা বৃষ্টি শুরু হয়েছে মালদহে। বৃহস্পতিবারও দিনভর বৃষ্টি চলে। যে সমস্ত জমিতে আলুর বীজ বোনা হয়েছে তার অধিকাংশ জমিতে জল দাঁড়িয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তায় আলুচাষিরা। তাদের আশঙ্কা, বৃষ্টি যদি লাগাতার চলে তবে চাষের শুরুতেই ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। যাঁরা এখনও আলুর বীজ বোনেননি, তাঁদের চাষ পিছিয়ে গেল বলে চাষিদের দাবি।
ধানেও ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিদের একাংশ। জেলার বিভিন্ন ব্লকে জমিতে ধান কেটে ফেলে রাখা আছে। বৃষ্টিতে তা নষ্ট হতে পারে। অনেক জমির ধান কাটাই হয়নি। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুরের পরে আকাশ পরিষ্কার হতে পারে। তাতে চাষিদের আশঙ্কা কাটছে না। জেলা কৃষি দফতরের উপ-কৃষি অধিকর্তা দিবানাথ মজুমদার বলেন, ‘‘জেলায় ৯৫ শতাংশ ধান কেটে নেওয়া হয়েছে। ধানে সে ভাবে ক্ষতির সম্ভাবনা কম। বৃষ্টির জেরে আলু ও ধান চাষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।’’
পুরাতন মালদহের আটমাইল এলাকার এক ধানচাষি মনতোষ রাজবংশী বলেন, ‘‘দিন তিনেক আগে ধান কেটে জমিতে রেখেছিলাম। এই ধান পুরোপুরি ভিজে গিয়েছে এবং জমিতে হালকা জল দাঁড়িয়েছে। ধান ভিজে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা করছি।’’ একই পরিস্থিতি গাজল, বামনগোলা-সহ জেলার অন্য ব্লকগুলিতেও।
মালদহ জেলায় ১০,২০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়ে থাকে। ধান কেটে নেওয়ার পরে অনেক জমিতে আলুর বীজ বোনা হয়েছে। অনেক জমি আলু চাষের জন্য তৈরি করে রাখা হয়েছে। বুধবার রাত থেকে হালকা বৃষ্টি আলু চাষে ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করেছে। পুরাতন মালদহ ব্লকের বেলাহারের আলুচাষি রাহুল সরকার বলেন, ‘‘১০ বিঘা জমিতে আলুর বীজ বুনেছি। বৃষ্টিতে সেই জমিতে হালকা জল দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতভর যদি বৃষ্টি হয় তবে বীজ নষ্ট হয়ে আলু চাষ মার খাবে।’’ ভাবুকের এক চাষি রাম মার্ডি বলেন, ‘‘ধান কেটে নেওয়ার পরে আলু চাষের জমি তৈরি করেছিলাম। দু’-এক দিনের মধ্যেই বীজ বোনার কথা ছিল। এ দিন দিনভর বৃষ্টি চলায় জমিতে হালকা জল দাঁড়িয়েছে। তা না শুকোনো পর্যন্ত বীজ বোনা যাবে না। ফলে, আলু চাষ পিছিয়ে গেল।’’