Dalkhola

দালাল চক্র থেকে সাবধান, পোস্টার থানায়

জেলা পুলিশের একটি সূত্রের খবর, একটি মামলায়  দালাল চক্রের দাপটের ঘটনা সামনে আসে। দালাল চক্র এবং পুলিশের যোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই জেলা পুলিশের তরফে এমন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

ডালখোলা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২০ ০৩:২৯
Share:

বার্তা: থানায় পোস্টার। ডালখোলা। নিজস্ব চিত্র।

‘দালাল চক্র থেকে সাবধান’, এমনই পোস্টার সাঁটা হল বিভিন্ন থানার দেওয়ালে।

Advertisement

উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর পুলিশ জেলা ও রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার মোট দশটি থানাতেই এমন নির্দেশিকা জারি করেছে পুলিশ। যা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। জেলা পুলিশের অবশ্য দাবি, সাধারণ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হন তাই এই নির্দেশিকা।

জেলার এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ ওঠে যে থানায় মামলা করতে গেলেই দালাল মারফত পৌঁছতে হয়। আর এতে অনেকেই হয়রানির শিকার হন। এমন কি, থানার ওসি, আইসিদের নাম করে দালাল চক্র টাকাও তোলে বলে অভিযোগ। এ সব নিয়ে জেলা পুলিশ কর্তাদের কাছেও নালিশ পৌঁছায়। সে সব রুখতেই এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। আর তাই থানায় ঢোকার মুখে দেওয়ালের গায়ে সাঁটা হয়েছে পোস্টার। তাতে লেখা, ‘দালাল থেকে সাবধান।'

Advertisement

জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, বছর দুয়েক আগেও একবার তৎকালীন উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশের তরফে এমন নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। ফের আবার এমন সতর্ক বার্তা দেওয়া হল।

এমন উদ্যোগকে অবশ্য সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। ডালখোলা শহরের বাসিন্দা নির্মল দে বলেন, "একটি মামলায় আমাকেও দালাল ধরে পুলিশের কাছে পৌঁছতে হয়েছিল। চরম হয়রানি হতে হয়।" একই অভিজ্ঞতা চাকুলিয়া, গোয়ালপোখর ও ইসলামপুর থানার বহু মানুষেরও।

তাঁদের অভিযোগ, দালালের ‘ফাঁদ’ এড়িয়ে থানা পৌঁছনো মানে বিরলতম ঘটনা। শুধু ভুক্তভোগীরাই নন, একান্তে এ কথা মেনে নিয়েছেন এই জেলার রাজনৈতিক দলের নেতাদের একাংশও। তাঁদের অভিযোগ, থানাগুলোতেই দালাল-রাজের রমরমা। শুধু বিজ্ঞপ্তিতে নয়, বাস্তবেও তা কার্যকর করতে হবে। চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রমজের (ভিক্টর) অভিযোগ, "থানায় তো দালাল ছাড়া কোনও কাজই সম্ভব নয়। রাজ্যের শাসক দলের মদতেই থানায় দালালদের এমন রমরমা।"

তবে ভিক্টরের এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল। পাশাপাশি তিনি এটাও বলেন , "দালালের ফাঁদে পড়ে অনেক মানুষ হয়রানির শিকারও হন। পুলিশের এমন উদ্যোগে সাধারণ মানুষ দালালদের হাত থেকে রক্ষা পাবেন।"

এমন সতর্ক বার্তা কেন? ইসলামপুর পুলিশ জেলা সুপার সচিন মক্কারের দাবি, "মানুষ যাতে দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে হয়রানির শিকার না হন তাই এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, যে কোনও অভিযোগ জানবার জন্য এলাকার মানুষ সরাসরি আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করুক।"

জেলা পুলিশের একটি সূত্রের খবর, একটি মামলায় দালাল চক্রের দাপটের ঘটনা সামনে আসে। দালাল চক্র এবং পুলিশের যোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই জেলা পুলিশের তরফে এমন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফের যাতে কেউ হয়রানির শিকার না হন সে জন্যই এমন সাবধানবাণী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement