ইটাহারের চালুনিয়া অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলের মিড-ডে মিল রান্নাঘরের বেহাল দশা। —নিজস্ব চিত্র।
দেওয়াল জুড়ে অসংখ্য ফাটল। মাঝেমধ্যেই খসে পড়ছে পলেস্তারা। ঝড়-বৃষ্টির জেরে, অ্যাসবেস্টসের চালার একাংশ ভেঙে গিয়েছে। চালা ধরে রাখার দু’টি কংক্রিটের থামের একাংশ ও কাঠের ধরনাও ভেঙেছে। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের চালুনিয়া অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলের মিড-ডে মিল রান্নাঘরের এমন পরিস্থিতি। যে কোনও সময়ে ওই রান্নাঘর ভেঙে পড়ে স্কুলের পড়ুয়া, শিক্ষক ও রাঁধুনিদের হতাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক তথা ইটাহার পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএমের প্রাক্তন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ পার্থসারথি মিত্র বলেন, “কয়েক মাস আগে, ব্লক প্রশাসনকে সমস্যার কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছি। কিন্তু স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্নাঘর সংস্কার কিংবা নতুন করে তৈরির ব্যাপারে কেউ উদ্যোগী হয়নি। যে কোনও দিন ওই রান্নাঘর ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছি।” স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির জেরে স্কুলের ওই রান্নাঘরের চারিদিকের দেওয়ালের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা মাঝেমধ্যেই খসে পড়ছে। ঘরের চালার ভাঙা অংশ দিয়ে বৃষ্টির জল পড়ে রান্নার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পার্থসারথি রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় জেলা পরিষদের সভাধিপতি পম্পা পালকে স্কুলের তরফে লিখিত ভাবে স্কুলের মিড-ডে মিল রান্নাঘর বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে রয়েছে বলে জানান। ওই চিঠির প্রতিলিপি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক দুলাল সরকারকেও দেন তিনি।
পার্থসারথি বলেন, “স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২৬৭ জন পড়ুয়া, সাত জন শিক্ষক ও তিন জন রাঁধুনি রয়েছেন। ওই রান্নাঘর ভেঙে পড়ে বিপদ হলে, তার দায় কে নেবে?” গত ১৮ অগস্ট জেলার করণদিঘির একটি প্রাথমিক স্কুলের ক্লাসরুমের ছাদের চাঙড় খসে পাঁচ পড়ুয়া জখম হয়। ওই ঘটনার কথা মাথায় রেখে চালুনিয়া অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্নাঘর বেহাল হওয়ার অভিযোগ মিলতেই তৎপর হয়েছে প্রশাসন। সভাধিপতি পম্পা বলেন, “জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দ্রুত ওই স্কুলের মিড-ডে মিল রান্নাঘর সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।” মহকুমাশাসক (রায়গঞ্জ) কিংশুক মাইতির বক্তব্য, “প্রশাসন ওই স্কুলের রান্নাঘরের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে।”
এই ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক দুলাল সরকারকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি এই দিন ফোন ধরেননি। এই বিষয়ে হোয়্যাটসঅ্যাপেও তাঁর পক্ষ থেকে কোনও রকম জবাব মেলেনি।