অনীত থাপা এবং অজয় এডওয়ার্ড। ফাইল চিত্র।
শীত বাড়তেই জমজমাট দার্জিলিঙের রাজনীতি। জিটিএ-র পরে দার্জিলিং পুরসভাতেও নতুন করে আবার দলবদল, ক্ষমতা বদলের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠেছে। পুরসভা সূত্রের খবর, আজ, বৃহস্পতিবার সকালে অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার তরফে দুপুরে কার্শিয়াঙে একটি রাজনৈতিক সভার ডাক দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে চাউর হয়েছে, সেখানে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি থেকে অন্তত ছ’জন কাউন্সিলর অনীতের দলে যোগ দিতে পারেন। তাতে পুরসভায় ক্ষমতা হারাতে পারে হামরো পার্টি। এই খবর পৌঁছে গিয়েছে কলকাতায় রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলেও। দলবদল ঘিরে যাতে কোনও গোলমাল না হয়, সে দিকে নজরদারি শুরু করার নির্দেশ এসেছে।
বুধবার রাতে অজয় এডওয়ার্ড বলেছেন, ‘‘অনীত থাপা এবং তাঁর দল দার্জিলিং পুরসভায় ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। কাউন্সিলরদের টাকা, শিলিগুড়িতে ফ্ল্যাটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিং বদলের স্বপ্ন নিয়ে মানুষের ভোটে জেতা কাউন্সিলরেরা এতে সাড়া দেবেন না বলেই আমাদের আশা।’’ তিনি জানান, হামরো পার্টির কাউন্সিলরেরা অনেকেই অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল। সেখানে অনীতের অনুগামী ‘বিল্ডার’রা ঘোড়া কেনাবেচা করতে ময়দানে নেমে পড়েছেন। দার্জিলিঙের গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য যা হচ্ছে, তা ভাল হচ্ছে না বলে অজয় জানান।
যদিও জিটিএ চিফ এগজ়িকিউটিভ তথা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত দলবদল, টাকার প্রলোভনের অভিযোগ নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে শান্তি বজায় রেখে, উন্নয়নের কাজ করে যাওয়াটাই আমার কাজ। সেখানে অনেকেই আমাদের পাশে আসছেন। আরও আসবেন।’’
সম্প্রতি জিটিএ-তেও হামরো পার্টির দলে ভাঙন হয়েছে। দু’জন জিটিএ সদস্য দল থেকে অনীতের দলে ঢুকেছেন। তার পর থেকে দু’দলের টানাপড়েন বেড়েছে। অনীতকে একহাত নিয়ে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে পাহাড়ে অজয় এডওয়ার্ড ও বিমল গুরুং পাশাপাশি আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে৷
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সূত্রের খবর, দু’দিন আগেই অজয়ের সঙ্গে রোশন গিরির দার্জিলিঙে বৈঠক হয়েছে। সেখানে রোশন আগামী ১০-১১ ডিসেম্বর দিল্লিতে গুরুং-এর ডাকা আলাদা রাজ্যের দাবির সমর্থনের কনভেনশনে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান। শোনা যাচ্ছে, নতুন পরিস্থিতিতে অজয় গুরুংয়ের অনুষ্ঠানে যাবেন বলে সম্মতি দিয়েছেন। এর মধ্যে দার্জিলিং পুরসভায় দলে ভাঙন, ক্ষমতা হারালে হামরো পার্টি আর গুরুং আরও কাছে আসবে। তাতে পঞ্চায়েত ভোটে দুই দল এক সঙ্গে যেতে পারে, এ সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। রোশন বলেছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট এখনও দেরি আছে। দেখা যাক কী-কী হয়।’’