গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ টাকা। —ফাইল চিত্র।
বিহার থেকে অসমে টাকা পাচারের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়ার ৫ জনকে দশ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিলে আদালত। এই ঘটনার পেছনে ঠিক কারা রয়েছেন, মূল অভিযুক্ত ঠিক কে, এ সব জানতে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ওই অর্থ পাচারের নেপথ্যে অসমের কয়লা এবং মাদক পাচার চক্রের যোগ সূত্র থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করছেন তদন্তকারীরা।
রবিবার রাতে জলপাইগুড়ির বানারহাট থানার অন্তর্গত তেলিপাড়া চৌপথি এলাকায় বিহার থেকে অসমগামী একটি ছোট গাড়ি থেকে এই বিপুল অঙ্কের টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। গাড়ির অতিরিক্ত টায়ারের ভিতরে কালো প্লাস্টিকে মোড়া অবস্থায় রাখা ছিল ওই টাকা। টাকা গুনতে ঢাকা হয় ব্যাঙ্ক কর্মীদের। মেশিন এনে টাকা গুনে ব্যাঙ্ক কর্মীরা জানান, মোট ৯৪টি বান্ডিলে ৯৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা মিলেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে এক জন ডালখোলা এবং বাকি ৪জন বিহারের পূর্ণিয়া জেলার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোমবার ধৃতদের জলপাইগুড়ি আদালতে হাজির করানো হয়। বানারহাট থানার পুলিশ তাঁদের নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আবেদন করে আদালতে। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে।
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘গোপন সূত্রে মারফত আমাদের কাছে খবর ছিল যে বিহার থেকে অসমগামী একটি গাড়িতে টাকা পাচার করা হচ্ছে। সেই মতো বানারহাট থানার বিন্নাগুড়ি ফাঁড়িকে নাকা তল্লাশির নির্দেশ দেওয়া হয়। আশপাশের কয়েকটি থানাকেও সতর্ক করা হয়। নাকা তল্লাশিতে বিহারের নম্বর প্লেটের একটি কালো রঙের গাড়িকে আটক করে পুলিশ। তল্লাশি চালিয়ে প্রথমে কিছুই উদ্ধার হয়নি। তবে ওই গাড়িতে থাকা পাঁচজনের কথাবার্তায় অসঙ্গতি দেখে তাঁদের বানারহাট থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর ধৃতেরা জানান গাড়ির স্টেপনি টায়ারের ভিতর টাকা রাখা আছে।’’
পুলিশ সুপার জানান, জেরায় ধৃতরা প্রথমে জানিয়েছিলেন ওই টাকা ব্যবসার। কিন্তু কোন ব্যবসা তার কোনও স্পষ্ট উত্তর তাঁরা দিতে পারেননি। এখন তদন্তকারীরা অনুমান করছেন কয়লা এবং মাদক পাচারকারীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ওই টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কারণ, অসম থেকে ওই পথ ধরেই বেআইনি কয়লা, ইয়াবা, গাঁজা ইত্যাদি বিহারে পাচার হওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে।
পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘ধৃতেরা অতীতে কোনও অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না জানতে বিহার পুলিশের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।’’