প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটের মুখে ইটাহারের বিভিন্ন এলাকায় বিহারের সন্দেহভাজন বাসিন্দাদের আনাগোনা বাড়ছে। গত ২০ জানুয়ারি ইটাহারের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি সর্ষেখেত থেকে ৩৬টি বোমা উদ্ধারের ঘটনার তদন্ত নেমে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এই তথ্য সামনে এসেছে বলে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দাবি।
এই পরিস্থিতিতে এক মাসের মাথায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ফের ইটাহারের পাইকপাড়ার শ্মশান লাগোয়া এলাকায় দুটি ব্যাগে ধানের তুষের মধ্যে ২০টিরও বেশি কৌটো বোমা উদ্ধারের পর চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন পুলিশ ও গোয়েন্দারা। তদন্তকারী এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা জাতীয় সড়কে ছিনতাই বা ডাকাতি করার জন্য বোমা মজুত করেছিল, না কি ওই ঘটনার সঙ্গে কোনও জঙ্গিযোগ রয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, জামাত উল মুজাহিদিন বাংলাদেশ(জেএমবি) জঙ্গিগোষ্ঠীর হয়ে নাশকতার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মালদহের সামসি থেকে ইটাহার থানার দুর্গাপুরের গাজিয়ার এলাকার বাসিন্দা নিজামুদ্দিন আহমেদ ও মারনাইয়ের কাশিমপুর এলাকার আব্দুল বারি নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের মুখে এক মাসের মাথায় দু’বার বোমা উদ্ধার এবং বিহারের কয়েকজনকে ইটাহারে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির খবর আসে।
বিহারের সেইসব বাসিন্দাদের সঙ্গে জঙ্গিযোগ রয়েছে কী না তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাদের দাবি, গত একমাস ধরে ইটাহারের সুরুণ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোরাহার, বাড়িওল, বাজিতপুর ও গুলন্দর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মুকুন্দপুর এলাকার নদী পার হয়ে বিহারের বিভিন্ন এলাকার সন্দেহভাজন বাসিন্দারা কেউ খেঁজুরের গুড় বিক্রি করার জন্য, কেউ আবার বঁটি, কাস্তে ও শিলপাটা ধার করানোর মিস্ত্রি হিসেবে ইটাহার সদর এলাকা, দুর্গাপুর, মারনাই, জয়হাট, চেকপোস্ট, দুর্লভপুর, শ্রীপুর-সহ ইটাহার ব্লকের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। গোয়েন্দাদের দাবি, অতীতে বিহারের বাসিন্দাদের এসব কাজ করার জন্য ইটাহারে আসার কোনও তথ্য নেই। তাঁরা ইটাহারের বিভিন্ন এলাকায় কোন কোন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন তা জানতে পুলিশ ও গোয়েন্দারা একাধিক দল করে নজরদারি শুরু করেছে।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘কোনও অপরাধ বা নাশকতার জন্য বিহার থেকে কেউ ইটাহারে আসছেন কী না, তা জানার জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দাদের সর্বক্ষণ নজরদারি রয়েছে।’’