উপাচার্য দীপককুমার রায়কে ঘেরাওমুক্ত করল পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় আট ঘণ্টা অবস্থান-বিক্ষোভ চলার পরে, গভীর রাতে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে উপাচার্য দীপককুমার রায়কে ঘেরাওমুক্ত করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাত পৌনে ২টো নাগাদ রায়গঞ্জ থানার পুলিশকর্মীরা, সেখানে গিয়ে আন্দোলনকারী তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের বুঝিয়ে উপাচার্যকে ঘর থেকে বার করে তাঁর গাড়িতে তুলে দেন। এর পরে, উপাচার্য তাঁর সরকারি আবাসনের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান।
উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে কাজ করা, বেআইনি ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট কমিটি ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ-সহ একাধিক দাবিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে উপাচার্যের ঘরের সামনের বারান্দায় অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীরা। আন্দোলনের জেরে, উপাচার্য তাঁর ঘরে আটকে পড়েন বলে অভিযোগ। একই সময়ে 'স্টেট এডেড কলেজ টিচার্স' (স্যাক্ট) আইনে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি শিক্ষক ও শিক্ষিকারা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, রাত দেড়টা নাগাদ উপাচার্য অসুস্থ বোধ করছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে জানান। এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুলিশকে উপাচার্যকে ঘেরাওমুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বার করে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তার পরেই পুলিশ সক্রিয় হয়।
যদিও আন্দোলনকারীদের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মী সংগঠনের নেতা তথা রায়গঞ্জ শহর তৃণমূলের সহ-সভাপতি তপন নাগের দাবি, তাঁরা উপাচার্যকে আটকে রাখেননি। শিক্ষাকর্মী, অতিথি শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের অবস্থান বিক্ষোভ দেখে উপাচার্য ঘনিষ্ঠদের নিয়ে সন্ধ্যা থেকে নিজের ঘরে ঢুকে ভিতর থেকে বাইরের গেটে তালা দিয়ে দেন। তপনের দাবি, “উপাচার্য দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। তিনি বেআইনি ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট কমিটি ভেঙে ওই কমিটির মাথায় বিজেপিপন্থী এক শিক্ষককে বসিয়েছেন। কমিটিতে শিক্ষাকর্মীদের রাখা হয়নি। এর প্রতিবাদে, ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন-সহ বিভিন্ন সরকারি আর্থিক সুবিধার দাবিতে আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অবস্থান-বিক্ষোভ করেছি।”
গভীর রাতে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তেই অবস্থান-বিক্ষোভ তুলে নেন অতিথি শিক্ষক ও শিক্ষিকারা। আন্দোলনকারীদের তরফে অতিথি শিক্ষক রাগিব আলি মিনহাজ বলেন, “মাসখানেক আগে, উপাচার্য লিখিত আশ্বাস দিয়েও অতিথি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ‘স্যাক্ট’ আইনে বেতন বাড়ানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছেন না। এরই প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছি।” উপাচার্য বলেন, “আইন মেনেই আগের এস্টেট কমিটি ভেঙে এক জন শিক্ষককে শীর্ষে বসানো হয়েছে। শিক্ষাকর্মীদের বাকি দাবি খতিয়ে দেখা হবে। ওঁরা রাজনৈতিক ভাবে আমার সম্পর্কে যা খুশি বলতে পারেন। অতিথি শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের নিয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি বৈঠক হবে।”