Coronavirus

সাতসকালে বাজারে ছুট পুলিশের

বলা যেতে পারে, উপচে পড়েছিল ভিড়। অবশেষে লাঠি হাতে পথে নামে পুলিশ-প্রশাসন। আবারও পূর্ণ লকডাউনে বৃহস্পতিবার কেমন ছিল কোচবিহার শহরের বিভিন্ন এলাকা ও বাজার?

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০ ০৪:২১
Share:

বিধিভঙ্গ: পূর্ণ লকডাউনের দ্বিতীয় দিন। চারিদিকে এত কড়াকড়ি প্রশাসনের। কিন্তু খোদ আদালত চত্বরেই ভিড়। বৃহস্পতিবার কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র

সকাল থেকেই শহরে ঢোকার রাস্তার মুখগুলিতে বসেছিল পুলিশ পিকেট। অটো-টোটো আটকে দেওয়া হচ্ছিল। যাত্রীদেরও বিশেষ কাজ না থাকলে শহরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছিলেন পুলিশ কর্মীরা। তার পরেও শেষ রক্ষা হয়নি। বলা যেতে পারে, উপচে পড়েছিল ভিড়। অবশেষে লাঠি হাতে পথে নামে পুলিশ-প্রশাসন। আবারও পূর্ণ লকডাউনে বৃহস্পতিবার কেমন ছিল কোচবিহার শহরের বিভিন্ন এলাকা ও বাজার? ঘুরে দেখল আনন্দবাজার পত্রিকা।

Advertisement

ভবানীগঞ্জ বাজার

কোচবিহার শহরের সব থেকে বড় ও পুরনো বাজার ভবানীগঞ্জ। শহর তো বটেই গ্রামের থেকেও হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন ওই বাজারে। এদিন চিত্রটা ছিল অবশ্য খানিকটা ব্যতিক্রম। বড় বড় কিছু দোকান বন্ধ ছিল। মাছ ও আনাজ বাজারে ভিড় ছিল আর পাঁচটা দিনের মতোই। দুপুর ১২টাতেও ভিড় হালকা হয়নি শুনে পুলিশ ঢুকে পড়ে বাজারে। তাঁদের সামনেই অনেকে মাস্ক না পরেই ঘুরে বেড়াতে থাকেন। এসব দেখে শুরু হয় লাঠি। তার পরই সব বন্ধ। ফাঁকা হয়ে যায় বাজার।

Advertisement

রেলগেট বাজার

শহরের এক প্রান্তে ওই বাজার। প্রতিদিন সকালেই মাছ-আনাজ নিয়ে বসে পড়েন দোকানিরা। গ্রামের থেকেও বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আনাজ নিয়ে যান ওই বাজারে। এ দিন সকাল ৮টা থেকে ওই বাজারে ভিড় উপচে পড়ে। গাদাগাদি করে চলতে থাকে কেনাকাটা। মাছ থেকে আনাজ সব জায়গায় ছিল একই চিত্র। তার মধ্যে একটি বড় অংশের গ্রাহক মাস্ক ছাড়াই দিব্যি বাজার করছিলেন। তাঁদের কোনও কিছুতেই যেন ভ্রূক্ষেপ নেই। কয়েকজন দোকানি মাস্ক পরলেও তা গলায় ঝুলছে। কেউ কেউ পান ও গুটখা চিবিয়ে পিক ফেলছেন পাশেই। দুই-একজন প্রতিবাদ করলেও কেউ তা কানেই নিচ্ছেন না। এমন ভাবেই বেশ কিছুক্ষণ চলল। এর পরে সেখানেও পৌঁছে যায় পুলিশ। তার পর ভিড় খানিকটা কমে যায়।

নতুন বাজার

ভবানীগঞ্জ থেকে কয়েকশো মিটারের দূরত্বে বাজার। মাছ-মাংস-আনাজের সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দোকানও রয়েছে সেখানে। ওই বাজারের জায়গা খুবই ছোট। একটি গলির ভিতরেই তা বসত। করোনা প্রকোপের সময় থেকে সেই বাজার গলির পাশাপাশি খানিকটা প্রধান রাস্তাতেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাতে একটু খোলামেলা হয়েছে। ওই বাজারেও সকাল থেকে ভিড় ছিল। অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছিলেন না বলে অভিযোগ উঠেছিল।

কলাবাগান বাজার

ছোট্ট বাজার। সেখানে সামান্য কিছু দোকান বসে সকালে। সেই বাজার ঘিরে অবশ্য অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল পুলিশ-প্রশাসনের কানেও। বুধবার সকালে ওই বাজারে মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় অনেক মানুষকে। এ দিন সেই বাজারে পরিদর্শন করে সবাইকে সতর্ক করেন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা।

তিনটি মুখ

শহরে ঢোকার তিনটি মুখ খাগরাবাড়ি, ঘুঘুমারি এবং বাবুরহাটে পুলিশ নজরদারি করে। সেই সব এলাকা থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় অটো-টোটো। তার মধ্যেই শহরে ঢুকে পড়ে অনেক অটো-টোটো। তা নিয়ে ক্ষোভ জানান লোকজন। পথে নামেন সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল, ট্র্যাফিক ডিএসপি চন্দন দাস, আইসি কোতোয়ালি সৌম্যজিৎ রায়। দিনভর রাস্তায় ছিলেন তাঁরা। মহকুমাশাসক বলেন, “লকডাউন নিয়ে প্রচারের সঙ্গে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।” জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা বলেন, “আইন মেনে সবাইকে চলতে হবে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের অবস্থাও খুব খারাপ।”

এদিকে, ফের বন্ধ মদনমোহন মন্দির। দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রেই খবর, বুধবার থেকেই মন্দিরে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে (এই সংক্রান্ত খবর ক৩-এর পাতায়)।

উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement