বাঁ দিকে, ম্যানেকিন তোলা হচ্ছে পুলিশের গাড়িতে। ডান দিকে, পুলিশের গাড়িতে আসিফ এবং আরিফ। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুলির গণ্ডিও পেরোয়নি মহম্মদ আসিফ। কিন্তু কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারদের সঙ্গে তুলনা হচ্ছে তার। কিন্তু একাহাতে কী ভাবে পরিবারের চার সদস্যকে খুন করল সে, এখনও কূল কিনারা করা যাচ্ছে না। এরই প্রেক্ষিতে কালিয়াচক হত্যাকাণ্ডের গোটাটাই পুনর্নির্মাণ করতে নামল মালদহ জেলার পুলিশ। তার জন্য আসিফের সঙ্গে কাপড়ের দোকান থেকে ম্যানেকুইন নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছল তারা।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই দফায় দফায় আসিফকে জেরা করে পুলিশ। জেরা করা হয়েছে আসিফের হাত থেকে পালিয়ে বেঁচে গিয়েছেন বলে দাবি করা তার দাদা মহম্মদ আরিফকেও। তাতে জানা গিয়েছে, অ্যাসিডে সকলকে ডুবিয়ে দেহ লোপাটের পরিকল্পনাও ছিল আসিফের। কিন্তু ঠিক কী কারণে পরিবারের সদস্যদের খুনের পরিকল্পনা করে আসিফ, একাহাতে কী ভাবে অচৈতন্য অবস্থায় সকলকে গুদামে টেনে আনে সে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি।
তার জন্যই মঙ্গলবার খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণে নামে মালদহ পুলিশ। গোটা বিষয়টির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। বিকেল ৪টে নাগাদ আসিফ এবং আরিফকে নিয়ে গুদামে পৌঁছয় পুলিশ। নিয়ে আসা হয় চারটি ম্যানেকুইন এবং বেশ কিছু প্লাইউড।
পুলিশ সূত্রে খবর, অচৈতন্য অবস্থায় হাত-পা বেঁধে, মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে সকলকে কফিনে পুরে দেয় আসিফ। পরে তাতে জল ভরে দেয় কফিনে, যাতে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে সকলে মারা যায়। তার পর গুদামের ভিতর চৌবাচ্চায় কফিনগুলি পুঁতে দেওয়া হয়। সেই ঘটনারই পুনর্নির্মাণ করছে পুলিশ। প্লাইউড আনা হয়েছে কফিন তৈরি করতে। মৃতদেহ হিসেবে ব্যবহার করা হবে ম্যানেকুইনগুলি।
অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, ঘুমের ওষুধ খেত আসিফ। সেই ওষুধই ফলের রসে মিশিয়ে পরিবারের লোকজনকে খাইয়েছিল। তার পর প্লাইউড দিয়ে তৈরি কফিনে সকলকে শুইয়ে, জল ভর্তি করে মাটির নীচের চৌবাচ্চায় ডুবিয়ে মেরেছিল। দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মঙ্গলবার খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ। তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজোরিয়া। শীঘ্রই চার্জশিট পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।