শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়। সঙ্গে উত্তরবঙ্গের আইজি, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গের পাহাড় থেকে সমতলের পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে এলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়। শুক্রবার দুপুরে বিমানে শিলিগুড়ি এসে বিকেলে কমিশনারেটের পুলিশ ফুটবল কাপের ফাইনালে উপস্থিত ছিলেন তিনি। পুলিশ সূত্রের খবর, সন্ধ্যায় ডিজি শিলিগুড়ি কমিশনারেটের অফিসারদের সঙ্গে এক দফা কথা বলেন। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা থেকে শুরু করে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার পুলিশকর্তারাও ছিলেন। আজ, শনিবার সকালে অন্য কয়েকটি জেলার অফিসারদের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা রয়েছে।
সেই বৈঠকে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের পরিকাঠামো, শিলিগুড়ির রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মহকুমা পরিষদ নির্বাচন এবং মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গ্রামীণ থানার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কথা হতে পারে। আগামী দিনে কমিশনারেটের প্রতিটি থানার মাথায় আইসি পদমর্যাদার অফিসারদের রাখার নির্দেশও বৈঠকে উঠবে বলে জানা গিয়েছে। বাকি জেলার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ডিজির কার্শিয়াংয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। জয়গাঁ-সহ ভারত-ভুটান সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নিতে পারেন ডিজি। রবিবার পাহাড় থেকে তিনি আলিপুরদুয়ারের দিকে যেতে পারেন। আগামী মাসের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলিপুরদুয়ার আসার কথা রয়েছে। সেখানে তিনি একটি গণবিবাহের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন।
বিমানবন্দরে নামার পর সফর নিয়ে ডিজি কোনও কথা বলেননি। কমিশনারেটের মাঠে পুলিশ কাপ ফুটবলের ফাইনাল খেলার পর তিনি টুর্নামেন্ট নিয়েই কথা বলেন। তবে রাজ্য পুলিশের অন্য এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশের প্রধান হিসাবে উনি উত্তরবঙ্গের কিছু বিষয় নিয়ে সরাসরি অফিসারদের সঙ্গে কথা বলতেই এসেছেন। পুরোটাই বাহিনীর অভ্যন্তরীণ বিষয়।’’
পুলিশের নজরে উত্তরবঙ্গ
• দার্জিলিং পাহাড়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি
• কোচবিহারের অনন্ত মহারাজ
• নতুন করে কেএলও সক্রিয়তা
• আলিপুরদুয়ারে মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত কর্মসূচি
• বিচ্ছিন্নতাবাদের সমর্থনে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী ও ব্যক্তি
• শিলিগুড়ি কমিশনারেটে নতুন থানার অন্তর্ভুক্তি
• ভারত-ভুটান, ভারত-নেপাল সীমান্ত
• আলাদা রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি
• জিটিএ এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ভোট
পুলিশ সূত্রের খবর, দার্জিলিঙে জিটিএ ভোট ঘিরে উত্তাপ বাড়ছে। বিমল গুরুং অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। পাহাড়ে বিজেপি থেকে শুরু করে বিভিন্ন পক্ষ নতুন করে গোলমালের আশঙ্কা করছে। কেএলও নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। অনন্ত মহারাজের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক ভাল হলেও নানা আলোচনা চলছে। এর মধ্যে পাহাড়ে রাজ্যভাগ, সমতলে বাংলাভাগের দাবি উঠছে। বিরোধী বিজেপি নেতা থেকে বিধায়ক-সাংসদেরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাঁরা অনুন্নয়নকে সামনে রেখে বিভাজনের পক্ষে সরব হয়েছেন। এ সবই ভাবাচ্ছে পুলিশের উপরমহলকে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে প্রতিটি জেলার উপর বাড়তি নজরদারি শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে পুলিশের পরিকাঠামোগত নানা কাজ।
এ সব নিয়ে উত্তরবঙ্গের আইজি, একাধিক ডিআইজি, জেলাগুলির পুলিশ সুপার, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের মতামত শোনার পর কী কী করণীয়, তা অফিসারদের ডিজি জানিয়ে দেবেন বলে সূত্রের খবর।