ফাইল চিত্র।
পে কমিশনের সুপারিশ অনুসারে নতুন বেতন কাঠামোর নথিপত্র সময়মতো তৈরি না হওয়ায় শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কর্মীদের বেতন আটকে গিয়েছে বলে অভিযোগ। সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি হয়ে গেলেও বেতন পাননি কোনও পুলিশকর্মীই। কমিশনারেট সূত্রের খবর, প্রতি মাসে ৩০ তারিখ থেকে ট্রেজারিতে বেতনের নথিপত্র তৈরির পর অনুমোদন হয়ে যায়। প্রতি মাসের পয়লা তারিখ কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যায়। কমিশনারেট তৈরির পর গত আট বছরে এই প্রথমবার কর্মীরা সময়মতো বেতন পেলেন না। গোটা ঘটনাটি পৌঁছে গিয়েছে নবান্নতেও। সোমবার কলকাতা থেকে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হল, তা নবান্ন থেকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যাতে সমস্ত পুলিশকর্মী হাতে বেতন পেয়ে যান, তা দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অর্থব বলেছেন, ‘‘কিছু নথিপত্রের সমস্যা ছিল। দ্রুত সবার বেতন হয়ে যাবে। সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ কনস্টেবল, এএসআই, এসআই, ইন্সপেক্টর মিলিয়ে ১৬০০ জনের মতো পুলিশ ফোর্সের জন্য প্রতি মাসে ৬ কোটি টাকার বেশি প্রয়োজন।
পুলিশ সূত্রের খবর, এদিন নথিপত্র তৈরির কাজ চললেও তা বিকেলের মধ্যে সম্পূর্ণ না হওয়ায় কমিশনারেটের কনস্টেবল থেকে আইপিএস পর্যায়ের কয়েক হাজার কর্মী জানুয়ারির বেতন পাননি। অফিসারদের আশা, আগামী ১-২ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটা হয়ে বেতন পেয়ে যাবেন সকলে। কিন্তু সরকারিস্তরে বহু আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে পে কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করে প্রত্যেক কর্মীর হিসাবপত্র জমা দেওয়ার দিনক্ষণ ঠিক থাকলেও তা কেন করা হয়নি, এ নিয়ে নিচুতলায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাঁদের একাংশ বলেছে, ‘‘উঁচুতলার একাংশ অফিসারের জন্য এটা হল।’’
কমিশনারেট সূত্রের খবর, রাজ্যের সমস্ত সরকারি দফতরের মতো শিলিগুড়ি পুলিশকেও ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন বেতন কাঠামো অনুসারে প্রত্যেক কর্মীর তথ্য দেওয়ার জন্য বলা হয়। পরে আবার সময় বাড়িয়ে ২০ জানুয়ারি করা হয়। কমিশনারেটের কাঠামো অনুসারে বাহিনীর বেতনের ‘ড্রয়ই অ্যান্ড ডিসবার্সমেন্ট’ অফিসার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর)। এই পদে ছিলেন অমিতাভ মাইতি। ২৪ জানুয়ারি তিনি আলিপুরদুয়ারের এসপি হয়ে চলে যান। তাঁর জায়গায় আসেন অঞ্জলি সিংহ। এই বদলের জেরে নথিপত্র তৈরির প্রক্রিয়া কিছুটা থমকে যায় বলে অভিযোগ।
পুলিশের এক কর্তা জানান, নতুন ড্রয়ই অ্যান্ড ডিসবার্সমেন্ট অফিসার নিয়োগ হলে তাঁর সই-সহ তথ্য অর্থ দফতরের অনুমোদন করাতে হয়। শিলিগুড়ি পুলিশের তরফে তা ২৬ জানুয়ারির পর শুরু হয়। সেই সঙ্গে ছিল কর্মীদের নতুন বেতন কাঠামোর যাবতীয় তথ্য। তা-ও সঠিকভাবে ছিল না বলেই মনে হয়। এর পরে সরস্বতী পুজো থেকে পাঁচ দিন রাজ্যে ছুটি পড়ে যায়। তাতে কোনও সরকারি কাজই হয়নি। তাতে ট্রেজারিতে অর্থ দফতরের অনুমোদন না আসায় শিলিগুড়ি পুলিশ বেতন ছাড়ার বিষয়ই ছিল না।