বন্ধ: এই দৃশ্য দেখা যাবে না এবারের কালীপুজো, দেওয়ালি এবং ছট পুজোয়।
দুর্গাপুজোয় নানা বিধিনিষেধ চাপিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কালীপুজোতেও তা অব্যাহত রইল। কোনও রকম বাজি কেনাবেচা এবং ফাটানো নিষিদ্ধ হয়ে গেল কালীপুজো, দেওয়ালি এবং ছটপুজোতেও। এই অবস্থায় বাজারে ঢুকে পড়া বাজি বিক্রি কী ভাবে আটকাবে পুলিশ-প্রশাসন, কী ভাবেই বা তা ফাটানো বন্ধ করবে, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
শিলিগুড়ি
কয়েক দিন আগে থেকেই করোনা কালে বাজির বিপদ নিয়ে সবাইকে সচেতন করছিল ৯০টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার যৌথ মঞ্চ শিলিগুড়ি ফাইট করোনা এবং চিকিৎসকদের মঞ্চ কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক। তার পরে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা। এবার নজর পুলিশ-প্রশাসনের দিকে, তারা কী ভাবে সামলাবে এই পরিস্থিতি?
শিলিগুড়ি পুলিশ সূত্রে খবর, আদালতের নির্দেশের পর বাজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বসতে পারে পুলিশ। তাছাড়াও নিষিদ্ধ শব্দবাজি রুখতে দুর্নীতিদমন শাখাকে আরও সক্রিয় করা হচ্ছ বলেই সূত্রের খবর। বস্তুত, এ বার বাজির বিক্রি নিয়ে প্রথম থেকেই দোটানায় ছিল সকলে। কালীপুজোর আর মাত্র ১০ দিন বাকি। এর মধ্যেই শহরে যা বাজি ঢোকার ঢুকে যায়। এ বারও বাজার হতে পারে ভেবে বেশ কিছু বাজি ঢুকে গিয়েছে বলে ব্যবসায়ী সংগঠন সূত্র খবর। আদালতের রায়ের পর সেগুলির প্রকাশ্যে বিক্রি বন্ধ হয়ে গেল। কিন্তু গোপনে বিক্রি ঠেকাতে কী পদক্ষেপ করবে পুলিশ? পুলিশ সূত্রে দাবি, আদালতের নির্দেশ হাতে পেলে তা কার্যকর করা হবে। কিন্তু শিলিগুড়ি শহরে গত কালীপুজো পর্যন্ত রমরমিয়ে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফেটেছে। পুলিশ-প্রশাসন কিছুই করতে পারেনি বলেই অভিযোগ। এবার চাপ আরও বেশি। কর্তাদের আশ্বাস, নজরদারি বাড়ানো হবে। যদিও এখন পর্যন্ত বাজি পাকড়াওয়ের ঘটনা সামনে আসেনি।
গত কয়েক দিন ধরেই বাজি নিয়ে সচেতনতার প্রচার চালাচ্ছিলেন অনেকে। কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের সদস্য সন্দীপ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বাজির ধোঁয়ায় থাকা সিসা, ক্যাডমিয়াম, সালফার মিলে আক্রান্ত, করোনামুক্তদের ক্ষতি করবেই। সুস্থরাও দ্রুত আক্রান্ত হতে পারেন।’’ শিলিগুড়ি ফাইট করোনা তথা ন্যাফের সদস্য অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘আমরা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে আবেদন জানাব, এ বার যে ভাবেই হোক বাজি রুখতেই হবে।’’
জলপাইগুড়ি
আতশবাজি সামলানো হবে কী ভাবে? জলপাইগুড়ির পুলিশের কাছে এটা এখনও বড় প্রশ্ন। হাইকোর্টের নির্দেশ শোনার পরে নিজেদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর। তবে প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না তাঁরা। কিন্তু প্রথম থেকে নজরদারি জোরালো ছিল না বলে এর মধ্যেই বেশ কিছু বাজি ঢুকে পড়েছে শহরে। তার মধ্যে শব্দবাজিও রয়েছে।
এ বছর করোনা পরিস্থিতি থাকায় বাজি না পোড়ানোর আবেদন জানায় স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু অভিযোগ, এর মধ্যেই জলপাইগুড়ি শহরে দিনবাজার, রায়কত পাড়া, সেন পাড়া ও অন্যান্য জায়গায় বাজি মজুত করা হয়েছে। প্রতিবছর দীপাবলির আগে শহরে বাজি অভিযানে নামে পুলিশ। বেআইনি ভাবে মজুত করা বাজির ঘাঁটিগুলি চিহ্নিত করে চলে অভিযান। কিন্তু এবছর এখনও পুলিশের অভিযান বা নজরদারি দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শহরের একাংশ দোকানে বিক্রি হচ্ছে বাজি। কোতোয়ালি থানার আইসি বিপুল সিংহ বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নিয়ম মেনেই কাজ চলছে। অভিযান করা হবে।’’
(সহ-প্রতিবেদন: শান্তশ্রী মজুমদার, বিল্টু সূত্রধর)