ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রাম জারিধরলা। — নিজস্ব চিত্র।
কোচবিহারের দিনহাটার গীতালদহ এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জারিধরলা গ্রামে খুনের ঘটনা নিয়ে বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক ওই হত্যাকাণ্ডের ছক কষেছিলেন বলে অভিযোগ শাসক দলের। ওই ঘটনায় বিএসএফের পরোক্ষ ভাবে মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে জোড়াফুল শিবির। যদিও বিজেপি নেতাদের পাল্টা অভিযোগ, যারা সংঘর্ষ ঘটিয়েছে তারা প্রত্যেকে মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত। টাকাপয়সার লেনদেন নিয়ে অশান্তি হয়েছে বলে গেরুয়া শিবিরের মত।
মঙ্গলবার ভোর ৫টা নাগাদ দিনহাটার গীতালদহের জারিধরলা এলাকায় গুলি চলার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় এক জনের। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায়ের দাবি, মোট সাত জন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ওই ঘটনায়। জখমরা প্রত্যেকে জেলার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি বলেও জানিয়েছেন তিনি। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এই জারিধরলা গ্রাম। সেখানে কাঁটাতারের বেড়া নেই। তৃণমূলের অভিযোগ, বিএসএফের মদত ছাড়া এই হত্যাকাণ্ড অসম্ভব। পার্থপ্রতিম সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘গ্রামীণ এলাকায় ভোটের সময় রাত্রে ছোট শিবির করে এলাকা পাহারার কাজ করেন তৃণমূল কর্মীরা। ঠিক তেমনটাই শিবির ছিল জারিধরলাতেও। রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা এসে পাটক্ষেতে লুকিয়েছিল। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে তারা পাটক্ষেত থেকে বেরিয়ে তৃণমূল কর্মীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।’’ তাঁর অভিযোগ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোমবার কোচবিহারে ফিরে এই খুনের ছক কষেছেন। মনোনয়ন পর্ব জমা দেওয়ার সময় হিংসার ঘটনা ঘটেছে ভাঙড়ে। এর পর সেখানে গিয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পুরুলিয়ার আদ্রায় নিহত তৃণমূল নেতা ধনঞ্জয় চৌবের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন তিনি। এই সূত্রেই পার্থপ্রতিমের প্রশ্ন, ‘‘রাজ্যপাল কি দিনহাটাতেও আসবেন?’’
পার্থপ্রতিমের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। দিনহাটা শহরের মণ্ডল সভাপতি অজয় রায় বলেন, ‘‘যারা সংঘর্ষে জড়িত তারা প্রত্যেকে মাদক পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত। মাদক পাচার এবং টাকাপয়সা নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে যে কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’
সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমার। তিনি বলেন, ‘‘জারিধরলা গ্রামটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা। সেখানে কাঁটাতার নেই। সেখানে কয়েক জন দুষ্কৃতী এসে আক্রমণ করেছে। নিহতের উপর আগ্নেয়াস্ত্র এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছিল। শোনা যাচ্ছে, আক্রমণকারীরা বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছে। যারা আক্রমণ করেছে তারা এখানকারই লোক। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের যোগসাজশ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ ওই এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।