প্রতীকী ছবি।
দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুন ও পকসো-সহ একাধিক জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা করল পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এক অভিযুক্ত বাদে, কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। সোমবার ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী দলের স্থানীয় নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, শাসক দল ও পুলিশ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যার ঘটনা বলছে। যদিও শাসক দলের দাবি, প্রশাসন যথাযথ তদন্ত করছে।
পরিবারের দাবি, শনিবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রী যখন বাড়িতে একা ছিল, তখন পড়শি পাঁচ যুবক তার ঘরের দরজা ভেঙে ঢোকে। এর পরে ছাত্রীটিকে গণধর্ষণের পরে, তাকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে পালিয়ে যায়। এক অভিযুক্ত গোপাল তন্ত্র থানায় আত্মসমর্পণ করলেও বাকিরা পলাতক। রবিবারই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন গোপালকে জেলা পকসো আদালতে তুলে পুলিশ ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতের আবেদন করে। সরকারি আইনজীবী সোমনাথ পাল বলেন, ‘‘বিচারক ধৃতের সাত দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন।’’
এ দিন ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করন সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ জিতেন দাস। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রীটি আত্মহত্যা করেছে বলে ময়নাতদন্তের আগেই পুলিশ মৃতার পরিবারকে জানায়। পুলিশ তো দলদাসের মতো কাজ করছে। আমরা বলছি, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে।’’ বিজেপি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী ও বিজেপি মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী দীপা বণিক অধিকারী ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। বাপির মন্তব্য, ‘‘অভিযুক্তদের যদি শাস্তি না হয়, প্রশাসনকে কী ভাবে অচল করতে হয় বিজেপি জানে।’’ তৃণমূল নেতা তথা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বিকাশ বসাক বলেন, ‘‘পুলিশ ঠিকঠাক তদন্ত করছে। তবে তদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আত্মহত্যা বলা যাবে না। এর আগেও অভিযুক্তেরা ছাত্রীর বাড়িতে গিয়েছিল। সালিশি সভায় আমার সামনে সকলে পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চেয়েছিল। সে ঘটনার রেশ হতে পারে।’’
পুলিশ জানায়, ডিএসপি ও আইসি ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করছেন। জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘পকসো-সহ খুনের মামলা করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ হেফাজত নেওয়া হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে। বাকিরা গ্রেফতার হবে।’’ ছাত্রীর বাবা বলেছেন, ‘‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ফাঁসি চাই।’’