কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীর মৃত্যুরহস্য আরও ঘনীভূত। — ফাইল ছবি।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী দীনেশ সাহার খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে আসছে পুলিশের। দীনেশ খুনে ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দু’জনেই দীনেশের পূর্বপরিচিত বলে প্রাথমিক অনুমান করা হয়েছিল। তদন্ত এগোতেই পুলিশের সেই অনুমান সঠিক বলে প্রমাণিত হয়। অকুস্থলে লাগানো সিসিটিভিতে স্পষ্ট, গুলি চালানোর আগে দীর্ঘ ক্ষণ দীনেশের সঙ্গে কথা হয় আততায়ীর।
পুলিস সূত্রে খবর, রায়গঞ্জ থানার পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে। ধৃতদের নাম মহম্মদ ইমরান এবং মুন্না মহম্মদ। ইমরানের বাড়ি ভাটোলে এবং মুন্নার বাড়ি পানিশালায়। বুধবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের তুলসীতলায় নিজের বাড়ি থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী দীনেশের। দীনেশ ভারতীয় বীজ নিগমে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসাবে কাজ করতেন।
ঘটনার পরেই তদন্ত নামে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল, এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন দীনেশেরই পূর্বপরিচিত কেউ। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাইরাল হওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গুলি চালানোর আগে আততায়ী দীনেশের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলছেন। তাতেই পুলিশের অনুমান সত্য বলে প্রমাণিত হয়। পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, খুনি দীনেশের পূর্বপরিচিত। তাতে তদন্তের গণ্ডি আরও সীমাবদ্ধ হয়ে আসে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে জুয়া এবং বেটিং কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দীনেশ। সেই কারণেই খুন বলে প্রাথমিক অনুমান। শুক্রবার রায়গঞ্জ আদালতে মুন্না এবং ইমরানকে তোলা হয়। মৃত দীনেশের তিনটি মোবাইল ফোন এবং একটি ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। মোবাইল থেকে তাঁর কল রেকর্ড অনুযায়ী সম্ভাব্য দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করারও চেষ্টা চলছে। পুলিশ সূত্রে খবর, আততায়ীদের ব্যবহার করা বাইকটিও চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।
পুলিশের একাংশের অনুমান, জুয়াখেলা নিয়েই সম্ভবত দীনেশের সঙ্গে অন্য কারও ঝামেলা চলছিল। কিন্তু কী এমন ঝামেলা যে জন্য খুন করাতে হবে, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না পুলিশ। সাধারণত, এই সমস্ত ক্ষেত্রে বিপুল টাকার লেনদেনের ব্যাপার থাকে। ছাপোষা সরকারি কর্মী দীনেশের ক্ষেত্রেও কি তাই? উত্তর এখনও অধরা। তবে প্রশাসন একটা বিষয়ে নিশ্চিত, দীনেশ খুনের সূত্র ধরেই জুয়াচক্রের পাণ্ডা পর্যন্ত পৌঁছতে পারবেন তাঁরা।