মালদহের কালিয়াচকে উদ্ধার হওয়া রাইফেল ও পাইপ গান। —নিজস্ব চিত্র।
শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে কালিয়াচকের নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুপনগর মোকলেশপাড়া গ্রামের একটি বাড়ি থেকে দু’টি রাইফেল ও তিনটি পাইপগান উদ্ধার করে কালিয়াচক থানার পুলিশ। অভিযোগ, ওই সব আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির জন্য আনা হয়েছিল। আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির কারবারে জড়িত সন্দেহে ওই বাড়ির মালিককেই গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম মালেক শেখ। ধৃতকে রবিবার মালদহের ভারপ্রাপ্ত সিজেএমের এজলাসে তুলে সাত দিনের জন্য হেফাজতে পেতে আবেদন করে পুলিশ। আদালত সূত্রে খবর, পাঁচ দিনের আবেদন বিচারক মঞ্জুর করেছেন।
বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারে বরাবরই শিরোনামে কালিয়াচক। আগেও পুলিশ হানা দিয়ে কালিয়াচকের একাধিক এলাকা থেকে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানার হদিশ পেয়েছিল। উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রও। এছাড়া, আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির কারবারে জড়িত সন্দেহেও অনেককে গ্রেফতার করা হয়। গত দু’মাস আগেই কালিয়াচকের শাহবাজপুর এলাকা থেকে ২০০টি কার্তুজ ও দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। লোকসভা ভোটের আগে নাকা চেকিং চলাকালীন দু’টি ম্যাগাজিন-সহ ৭.৬৫ এমএম পিস্তল, ১০টি অত্যাধুনিক পাইপগান, ৫০ রাউন্ড কার্তুজও উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় তিনজনকে। ধৃতদের জেরা করা পুলিশ জানতে পেরেছিল, ওই আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজগুলি বিহারের মুঙ্গেরে তৈরি। মুঙ্গের থেকে ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ হয়ে আগ্নেয়াস্ত্রগুলি কালিয়াচকের সুলতানগঞ্জে নিয়ে আসা হচ্ছিল বিক্রির জন্য। এ ছাড়াও আকছার আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে কালিয়াচকে।
এবার কালিয়াচকেরই নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুপনগর মোকলেশপাড়ায় ধৃতের বাড়ি থেকে দু’টি রাইফেল, তিনটে পাইপগান উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত মালেক আগে জাল নোটের কারবারে জড়িত ছিল। ওই কারবারে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালে দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। ওই মামলায় সে জামিনে মুক্ত রয়েছে। আবার জালনোটের কারবারে জড়িত সন্দেহে একবার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাও (এনআইএ) তাঁকে গ্রেফতার করে। সেই মামলাতেও সে জামিনে রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, মালেক বেশ কয়েক বছর ধরে জালনোটের কারবারের পাশাপাশি বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারেও হাত পাকায়। বিহারের মুঙ্গের ও ঝাড়খণ্ডের দুমকা এলাকা থেকে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র এনে তা বাড়ি থেকেই চড়া দরে বিক্রি করত সে। এই কারবারের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন জড়িত রয়েছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার রাতে বাড়ি থেকেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ডিএসপি (সদর) বিপুল মজুমদার বলেন, “ধৃতকে জেরা করে এই বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারের সঙ্গে আরও কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে।”