ঠায়: দিনভর চাইল্ড লাইনে কাটল যমজ দুই খুদের। নিজস্ব চিত্র
মা নেই। তাঁকে খুন করার অভিযোগে বাবাও জেল হেফাজতে। দুই শিশুকন্যার দায়িত্ব নিতে তাদের মাতামহকে অনুরোধ করেছিল পুলিশ। সেই দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত বুধবার বিকেলে আড়াই বছরের যমজ দুই বোনের ঠাঁই হল হিলির এক হোমে। তার আগে দু’টি বাচ্চার প্রায় সারাটা দিনই কাটল বালুরঘাটের চাইল্ডলাইনে, সম্পূর্ণ অপরিচিত পরিবেশে।
সোমবার রাতে মারা যান ওই দুই শিশুর মা অপর্ণা মজুমদার। পুলিশ জানিয়েছে, অপর্ণা স্বামী ও তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধরের অভিযোগ ছিল। ওই দিন রাতে অপর্ণাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তার জেরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বেগতিক দেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন কুমারগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান। মঙ্গলবার সকালে খবরটি জানাজানি হতেই ক্ষুব্ধ প্রতিবেশীরা অপর্ণার স্বামী পঙ্কজ মজুমদারের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর করেন। পুলিশ গিয়ে পঙ্কজ, তাঁর বাবা যুধিষ্ঠির এবং পঙ্কজের মা ও ভাইকে গ্রেফতার করে। এ দিন তাঁদের বালুরঘাট আদালতে তোলা হলেও কোনও শুনানি হয়নি। ফলে তাঁদের সকলেরই জেল হেফাজত হয়েছে। তাঁদের গ্রেফতারির পর মঙ্গলবারই পঙ্কজ-অপর্ণার দুই যমজ শিশুকন্যা শ্রেয়সী ও শ্রেয়াকে তাদের ঠাকুরদা হরিশ অধিকারীর হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তাঁরা দুই নাতনির দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। তাই এ দিন কুমারগঞ্জ থানা থেকে ওদের জেলা চাইল্ডলাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানেই প্রায় সারাদিন ছিল তারা। বিকেলে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় হিলি সরকার অনুমোদিত একটি হোমে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কুমারগঞ্জ থানার ওসি সুদীপ্ত দাস জানান, মঙ্গলবার তাঁরা দুই শিশুকে তাদের ঠাকুরদার হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ও তাঁর পরিবার তাদের নিতে অস্বীকার করেন। সে জন্যই বাচ্চাদু’টিকে হোমে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ফোনে শিশুদু’টির ঠাকুরদা হরিশ জানান, তিনি দিনমজুরের কাজ করেন। বাড়িতে তিনি ও তাঁর স্ত্রী দু’জনেই বৃদ্ধ। তাই ওই বাচ্চাদু’টিকে দেখার ক্ষমতা তাঁদের নেই। তবে তিনি জানান, তাঁরা আর্থিক ভাবে একেবারেই দুর্বল। তাঁদের জামাই পঙ্কজ দুই বাচ্চার নামে কোনও সম্পত্তি লিখে দিলে তাঁরা তাদের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।