নজরদারি: লকডাউন উপেক্ষা করে বেরনোয় রাস্তায় টোটোচালকদের জিজ্ঞাসাবাদ। আলিপুরদুয়ারে। ছবি: নারায়ণ দে
শনিবারের লকডাউন তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও শুক্রবার লকডাউন ভাঙার ছবি দেখা গেল কোচবিহারে। লকডাউন ভেঙে রাস্তায় বেরনো দেড় শতাধিক বাসিন্দার এ দিন করোনার র্যাপিড টেস্ট করানো হয়। লকডাউন ভাঙার ছবি দেখা গেল আলিপুরদুয়ার শহর ও জেলার শামুকতলা, কামাখ্যাগুড়ি, বারবিশা, কালচিনি, জয়গাঁর মতো বিভিন্ন জায়গাতেও।
শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টির মধ্যেই নজরদারিতে নামে প্রশাসনের একটি বিশেষ দল। কোচবিহারে মরাপোড়া চৌপথি এলাকার কাছেই করা হয় লালারস পরীক্ষার অস্থায়ী শিবির। সেখানেই রাস্তায় বেরনো বাসিন্দাদের মধ্যে যারা সদুত্তর দিতে পারেননি, তাঁদের র্যাপিড টেস্ট করানো হয়। পরে ভবানীগঞ্জ বাজার লাগোয়া এলাকায় আরও একটি অস্থায়ী শিবির করে বাসিন্দাদের র্যাপিড টেস্ট করান প্রশাসনের কর্মীরা। কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “চিকিৎসা বা জরুরি প্রয়োজনে যারা বেরোন, তাঁদের যাতে অসুবিধা না হয় তা দেখা হয়েছে। তবে যাঁরা কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ দেখাতে পারেননি, তাঁদের র্যাপিড টেস্ট করানো হয়েছে। দু’টি শিবিরে ১৭০ জনের টেস্ট হয়।’’
শুক্রবার সকাল থেকেই তৎপর ছিল পুলিশ। তারমধ্যে বৃষ্টি থাকায় রাস্তায় লোকজনের আনাগোনাও ছিল কম। বিভিন্ন রাস্তায় বাইক, টোটো দেখলেই যাতায়াতের কারণ জানতে চায় পুলিশ। কোচবিহার শহরের পাশাপাশি লাগোয়া টাকাগছ, খাগরবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও নজরদারি চালান প্রশাসনের ওই দলের সদস্যেরা। খাগরাবাড়ি এলাকায় রাস্তার পাশে এক মুরগি বিক্রেতা প্রশাসনের গাড়ি দেখে দৌড়ে লুকিয়ে পড়েন। টাকাগছের সুঙসুঙি বাজারেও কয়েকটি দোকান বন্ধ করে সতর্ক করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, আইন ভাঙায় এ দিন জেলায় ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ দিকে, আলিপুরদুয়ার জেলা শহরের মূল রাস্তায় পুলিশি নজরদারি থাকায় অলিগলি দিয়ে অবাধে চলেছে অটো, টোটো, বাইক। দু’একটি দোকানও ছিল খোলা। লকডাউন ভাঙা। এ দিন বোশ কিছু টোটো ও বাইক আটক করে পুলিশ। বেশ কিছু বাইক চালকের মাথায় হেলমেট না থাকায় জরিমানা করে পুলিশ। পুলিশ কড়া হতেই দুপুর সাড়ে বারোটার মধ্যে শহরের রাস্তা ফাঁকা হয়ে যায়।
আলিপুরদুয়ার জেলায় মোট আক্রান্ত তিন হাজার পেরিয়ে গিয়েছে।এর পরেও লকডাউন ভাঙার প্রবণতায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে শহরে। এক পুলিশ কর্তা জানান, জানান, শহরের প্রতিটি গলিতে নজর রাখা সম্ভব নয়। সংক্রমণ রুখতে মানুষকেও সচেতন হতে হবে। আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া বীরপাড়া এলাকাতেও দাপিয়ে বেড়ায় অটো, টোটো, বাইক। জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য জানান, কোথাও লকডাউন ভাঙা হয়নি। সকাল থেকেই ছিল পুলিশের কড়া নজরদারি।