ভাঙচুর: ডাকঘরে। নিজস্ব চিত্র
ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও আধার কার্ড সংশোধন, সংযোজন ও নতুন কার্ডের আবেদন জানানোর সুযোগ না পাওয়ার অভিযোগে রায়গঞ্জের মুখ্য ডাকঘরে ভাঙচুর চালানো হল। মঙ্গলবার সকালে ওই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় রায়গঞ্জ শহরের হাসপাতাল রোড এলাকায় ওই ডাকঘর চত্বরে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে ডাকঘর চত্বর থেকে বের করে পরিস্থিতি সামলায়। সেই সময় পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে বাসিন্দাদের হেনস্থা করারও অভিযোগ উঠেছে।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমারের বক্তব্য, ডাকঘরের তরফে পুলিশের কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ ভিত্তিহীন।
প্রায় তিন মাস ধরে রায়গঞ্জের মুখ্য ডাকঘরে আধার কার্ড সংশোধন, সংযোজন ও নতুন কার্ডের আবেদন জানানোর প্রক্রিয়া চলছে। ডাকঘর সূত্রে খবর, দু’সপ্তাহ পরপর এক দিন আবেদনকারী ১০০ পুরুষ ও ১০০ মহিলা মিলিয়ে দু’শো জনের নাম নথিভূক্ত করা হয়। এ দিনও নাম নথিভুক্তকরণের তারিখ ছিল। সকাল ১০টা নাগাদ সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোর ৪টে থেকে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার ও করণদিঘি ব্লকের বিভিন্ন এলাকার কয়েকশো পুরুষ ও মহিলা লাইনে দাঁড়ান। সকাল ১০টা নাগাদ ডাকঘর কর্তৃপক্ষ লাইনে আগে দাঁড়ানোর ভিত্তিতে আবেদনকারীদের নাম নথিভুক্ত করার কাজ শুরু করেন। বেলা ১১টা নাগাদ ডাকঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, এ দিন একশো জন করে পুরুষ ও মহিলার নাম নথিভুক্তিকরণের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই সময় আরও শ’তিনেক মানুষ লাইনে অপেক্ষা করছিলেন। অভিযোগ, সে কথা শুনে এক দল লোক ডাকঘর ভবনের কয়েকটি জানালার কাঁচ ভাঙচুর করেন। তার জেরে উত্তেজনা ছড়ায়। বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।
রায়গঞ্জের কাশীবাটী হাইস্কুলের শিক্ষক নারায়ণ সরকার বলেন, ‘‘টাকা তোলার জন্য ডাকঘরে গিয়েছিলাম। পুলিশ ভাঙচুরে জড়িতদের না পেয়ে আমাকে জ্যাকেটের কলার ধরে টেনে বাইরে বের করে দেয়।’’
রায়গঞ্জের তাহেরপুর ও গোয়ালপাড়া এলাকার জগন্নাথ বর্মণ ও কণিকা দাস বলেন, ‘‘আমাদের মতো অনেকে ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও আবেদন জানাতে পারেননি। কে বা কারা ডাকঘরে ভাঙচুর করেছে, তা জানা নেই।’’ পোস্টমাস্টার নিরঞ্জন রায়ের বক্তব্য, ‘‘ডাকঘরে কর্মী ও কম্পিউটারের অভাব রয়েছে। সেই কারণে দু’সপ্তাহে ২০০টির বেশি আধার কার্ড সংশোধন, সংযোজন ও নতুন কার্ডের আবেদন নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’’