মাঝপথে: কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস বাতিল হওয়ায় আলিপুরদুয়ার জংশনে আটকে পড়লেন কয়েকজন পর্যটক। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
সেই বৃহস্পতিবার রাত থেকে আটকে পড়েছেন। কবে ট্রেন চলবে, কীভাবে বাড়ি ফিরবেন— রবিবার রাতেও তাঁদের কাছে কোনও উত্তর নেই। তাই তিন দিন ধরে প্ল্যাটফর্মেই দিনযাপন নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে আটকে পড়া আগরতলার কয়েকজন যাত্রীর।
এখানেই শেষ নয়। ট্রেন বাতিলের খবর না থাকায় শনিবারের মতো রবিবারও বহু যাত্রী এই স্টেশনে এসে ফিরে গিয়েছেন। কাছাকাছি দূরত্বের যাত্রীরা বাস ধরে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন। দূরপাল্লার যাত্রীদের কেউ কেউ গাড়ি ভাড়া করেছেন। এ দিন দুপুর থেকে শিয়ালদহ ও হাওড়ামুখী একাধিক ট্রেন বাতিল হওয়ায় সমস্যায় পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী। দুর্ভোগে পড়েন ডুয়ার্সে ঘুরতে আসা কিছু পর্যটকও।
এদিন দুপুরে নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে আটক পড়া আগরতলার যাত্রীদের দেখতে যান রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। আগরতলার বাসিন্দা এক যাত্রী হরিপদ দেবনাথ জানান, এদিন সকালে টিফিনে রেলের তরফে পরোটা, তরকারি ও লাড্ডু খাওয়ানো হয়। দুপুরে ভাত-ডালের সঙ্গে ছিল আলুভাজা, পনীরের তরকারি ও আরেকটি তরকারি। ওই যাত্রীদের আটজন মহিলার রাতে থাকার জন্য গতরাতে ওয়েটিং রুম খুলে দিয়েছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। তবে হরিপদবাবুদের একটাই চিন্তা, কবে বাড়ি ফিরবেন।
নিউ আলিপুরদুয়ারের স্টেশন ম্যানেজার সুনীলকুমার দত্ত জানান, আগরতলার আটকে থাকা যাত্রীরা সরাসরি আগরতলার ট্রেনে যেতে চাইছেন। আপাতত আগরতলার সরাসরি কোনেও ট্রেন নেই। তবে ওই যাত্রীদের খাওয়াদাওয়া-সহ নানা বিষয়ে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
এদিন নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন থেকে পদাতিক ও আলিপুরদুয়ার জংশন স্টেশন থেকে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস বাতিল হয়। ফলে সমস্যায় পড়েন বহু যাত্রী। রেল দফতরের আধিকারিকরা জানান, দু’টি স্টেশনে এই দু’টি ট্রেন বাতিল হওয়ায় আলিপুরদুয়ার শহরের প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি যাত্রী সমস্যায় পড়েন। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধকারিক শুভানন চন্দ জানান, ভালুকা স্টেশনে গন্ডগোলের জেরে অধিকাংশ ট্রেন একদিনের জন্য বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীরা চাইলে নিয়ম মেনে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
শিয়ালদহ ফেরার জন্য আলিপুরদুয়ার জংশন স্টেশনে জয়ন্তী-ফেরত একদল প্রবীণ পর্যটক। এদিন দুপুরে ৩টে কুড়ি নাগাদ স্টেশনে ঢোকার পর বেহালা ও বারুইপুরের ওই পর্যটকরা জানতে পারেন ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। তাঁরা আপাতত কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।
পর্যটক সুকুমার মজুমদার, তাপস সিংহরায়, অমিত মজুমদার, মহীতোষ সামন্ত, অলোক ঘোষেরা ট্রেন বাতিলের খবর শুনে বিপাকে পড়েন। সুকুমার মজুমদার, তাপস সিংহরায়েরা জানান, এদিন ট্রেন ধরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। আচমকা স্টেশনে এসে ট্রেন বাতিলের খবর পান। তাঁরা জানালেন, নিউ জলপাইগুড়ি যেতে অত্যধিক ভাড়া চাইছেন গাড়িচালকেরা। পরে অবশ্য বেশি ভাড়াতেই তাঁরা নিউ জলপাইগুড়ি রওনা দেন। তুফানগঞ্জের বাসিন্দা সুব্রত দাস জানান, এদিন কাঞ্চনকন্যায় বর্ধমান যাওয়ার কথা ছিল। ট্রেন বাতিলের খবর শুনে তিনি কোচবিহার ফিরে যান।