চড়াও: পুরকর্মীদের উপর চড়াও হয়েছেন এলাকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। শুক্রবারের ঘটনা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
বাড়ি বাড়ি জ্বর। অথচ গোটা অক্টোবরে এলাকায় পুরকর্মীদের মশা তাড়ানোর স্প্রে, ধোঁয়া ছড়াতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। জ্বরের প্রকোপ থাকলেও কেন পুরকর্মীরা পদক্ষেপ করছেন না তা নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছিলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা, জমছিল ক্ষোভও। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার মারা যায় ওই এলাকার বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত এক কিশোর। শুক্রবার পুরকর্মীরা এলাকায় সাফাইয়ের কাজে গেলে ক্ষোভ ফেটে পড়েন স্থানীয়দের একাংশ। পুরকর্মীদের মারধর করার অভিযোগও উঠেছে।
এ দিন বেলা পৌনে ১০টা নাগাদ ১ নম্বর ওয়ার্ডের ধরমনগরে যান পুরকর্মীরা। ছিলেন ‘কনজারভেন্সি ইন্সপেক্টর’ সঞ্জয় চক্রবর্তী, ওয়ার্ড মাস্টার মদন কিশোর সিংহ। পুরকর্মীরা এলাকায় এলেই তাঁদের ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসীদের একাংশ। কেন এতদিন ধরে এলাকায় ধোঁয়া ছড়ানো, স্প্রে করা হয়নি সেই প্রশ্ন তুলে পুরকর্মীদের কাছে জবাব চান তাঁরা। একজন প্রশ্ন করেন, ‘‘এতদিন কোথায় ছিলেন? এখন এলেন ধোঁয়া ছড়াতে।’’ সেই কথার রেশ ধরেই ক্ষোভ দেখাতে থাকেন বাকিরা। এরই মাঝে কয়েকজন সঞ্জয় চক্রবর্তী, মদন কিশোর সিংহ-সহ ৪ জনকে মারধর করে বলে অভিযোগ। বেগতিক দেখে কর্মীরা পালিয়ে যান। ঘটনার কিছুক্ষণ পরে পুলিশ এলাকায় গিয়ে এক দফা টহল দিয়েছে। তবে পুলিশে এ দিন রাত পর্যন্ত অভিযোগ হয়নি। সাফাই বিভাগের আধিকারিকরা ঘটনার বিষয়টি পুর কমিশনারকে জানিয়েছেন। পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
এ দিন চিন সফর থেকে ফেরেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। তিনি জানান, এখনই পুলিশে অভিযোগের বিষয় নেই। তিনি জানান, মৃত্যুর ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক তবে পুরকর্মীদের দায়ী করে এলাকার কিছু লোকজন মারধর করবে সেটা যুক্তি সঙ্গত নয়। তিনি বলেন, ‘‘কাজে কোথাও কোনও ভুল হলে তা শুধরে নিতে হবে।’’
এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মালতি রায় জানান, বুধবার সন্ধ্যায় এলাকায় ধোঁয়া ছড়ানো হয়। ১৯ অগস্ট নিকাশি একবার সাফ করিয়েছিলেন বলে দাবি কাউন্সিলরের। ডেঙ্গিতে মৃত্যু হওয়ায় তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করে এলাকার নিকাশি সাফাইয়ের জন্য লোক পাঠিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। সেই মতো এ দিন নিকাশি পরিষ্কার করতে ওয়ার্ড মাস্টার মদন কিশোর সিংহ এবং আরও দুই জন গেলে তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুরসভার মেয়র-ডেপুটি মেয়রের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দেন বাসিন্দাদের একাংশ। মৃতের পরিবারের তরফে অবশ্য ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের সামলানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
এ দিনের ঘটনার কথা কাউন্সিলরের তরফে বরো চেয়ারম্যান স্নিগ্ধা হাজরাকে জানানো হয়েছে। বাসিন্দাদের তরফে ডেঙ্গি প্রতিরোধে সাফাই, ধোঁয়া ছড়ানোর কাজ ঠিক মতো না হওয়ারও অভিযোগ হয়েছে। ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতো বলেন, ‘‘ওই ছাত্রের মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক। মৃত্যু কারণ স্বাস্থ্য দফতরের তরফেই জানানো হবে।’’