Maldah

ঘর ভেঙে বাঁধে আশ্রয়

এ দিন সকালেই ভুতনির ভাঙন কবলিত এলাকায় যান মহকুমাশাসক (মালদহ সদর) ও এলাকার বিডিও। পরে, প্রশাসনের উদ্যোগে বাঁধের উপরে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলিকে চামা এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

মালদহ শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৫৯
Share:

কেশরপুর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন কালুটোনটোলার বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

গঙ্গা ও কোশী নদীর জোড়া-ভাঙনে জেরবার মালদহের মানিকচকের ভুতনি। বৃহস্পতিবার রাতে ভুতনির কেশরপুর সংলগ্ন কালুটোনটোলায় গঙ্গার জলের তোড়ে পুরনো সার্কিট বাঁধের একাংশ-সহ প্রায় একশো মিটার এলাকা ধসে পড়ে। সার্কিট বাঁধ এবং তার পিছনে পঞ্চায়েত বাঁধের মাঝের এলাকায় গঙ্গার জল ঢুকে পড়ে। এই পরিস্থিতে ওই এলাকার অন্তত ৫০টি পরিবার নতুন করে শক্তিশালী করা পঞ্চায়েত বাঁধে রাত থেকে আশ্রয় নিতে শুরু করে। শুক্রবার সকালেও বেশ কিছু পরিবার তাঁদের পাকা বাড়ি ভেঙে আশ্রয় নেন সে বাঁধের উপরে।

Advertisement

এ দিন সকালেই ভুতনির ভাঙন কবলিত এলাকায় যান মহকুমাশাসক (মালদহ সদর) ও এলাকার বিডিও। পরে, প্রশাসনের উদ্যোগে বাঁধের উপরে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলিকে চামা এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে প্রশাসনের তরফেই রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। এ দিকে, পশ্চিম রতনপুর এলাকায় কোশীর ভাঙনে ভুতনি সার্কিট বাঁধের একাংশ ভেঙে গিয়েছে। বাঁধ টিকিয়ে রাখতে সেখানে অবশ্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে সেচ দফতর। এ দিন রাতভর সেখানে ভাঙন মোকাবিলায় কাজ হবে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া, গঙ্গার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে পড়ছে গঙ্গাবক্ষে জেগে ওঠা মানিচকের গদাই ও নারায়ণপুর চর। এ দিন বিকেল পর্যন্ত দুই চরে দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ না পৌঁছনোয় ক্ষোভ ছড়িয়েছে। গঙ্গার জল এ দিন ঢুকে পড়েছে মানিকচকের জোতপাট্টা, ডোমহাটের মতো অসংরক্ষিত গ্রামগুলিতেও।

গঙ্গার জল বাড়তেই ভাঙন শুরু হয়েছিল ভুতনির কেশরপুর ও কালুটোনটোলায়। ভাঙন ঠেকাতে সেচ দফতর বালির বস্তা ফেলে কাজও শুরু করে। কিন্তু গঙ্গার জলস্তর ক্রমশ বাড়তে থাকায় ভাঙনের তীব্রতা আরও বেড়েছে। সেচ দফতর জানিয়েছে, গঙ্গার জলস্তর বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে এবং চরম বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। এ দিন দুপুরে জলস্তর ছিল ২৫.১৭ মিটার। এ দিকে, বৃহস্পতিবার রাতে আচমকা কালুটোনটোলা প্লাবিত হওয়ায় আতঙ্কে প্রায় ৫০টি পরিবার পঞ্চায়েত বাঁধের উপরে আশ্রয় নেয়। তাঁদের মধ্যে ছেদন, সুবোধ, যোগেশ মাহাতোরা বলেন, ‘‘নিজেদের আর কোনও জায়গা না থাকায় বাঁধে আশ্রয় নিতে হয়েছে।’’

Advertisement

এ দিন এলাকায় গিয়ে সদর মহকুমাশাসক সুরেশচন্দ্র রানো বলেন, ‘‘ওই পরিবারগুলিকে ভুতনিরই চামা এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে ও তাঁদের রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।"

ভাঙন পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠায় এ দিন সকালেই ভুতনিতে চলে যান সেচ দফতরের অধীক্ষক বাস্তুকার (উত্তর মণ্ডল ১) উত্তমকুমার পাল, মালদহ ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার বিপ্লবকান্তি রায় সহ আধিকারিকেরা। অধীক্ষক বাস্তুকার বলেন, ‘‘যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে কাজ চলছে। রাতভর যাতে কাজ করা যায় সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’’ সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘ভাঙন ঠেকাতে আমরা সাধ্য মতো চেষ্টা করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement